চলচ্চিত্রের গানেও শ্রোতাপ্রিয় আইয়ুব বাচ্চু

আইয়ুব বাচ্চু। ছবি: সংগৃহীত

ছয় তারের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার ও সুরকার। আজ ১৬ আগস্ট এই কিংবদন্তির জন্মদিন। বেঁচে থাকলে ৬৪ বছর বয়সে পা রাখতেন এই রক লিজেন্ড।

ব্যান্ডের গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানেও সফল ছিলেন ব্যান্ডতারকা আইয়ুব বাচ্চু। যে অল্প কয়েকটা গান সিনেমায় তিনি গেয়েছেন, তার সবগুলোই আলোচিত হয়েছে দর্শকদের কাছে। তবে তার সিনেমার এই গানগুলো নিয়ে  খুববেশি আলোচনা হয়নি। কারণ, ব্যান্ড সংগীতের বাইরে অনেকেই সিনেমার গানে ভাবতে পারেননি এই কিংবদন্তি শিল্পীকে। তার সিনেমার গানগুলো আজও ছড়িয়ে রয়েছে শ্রোতাদের হৃদয়ে।

আইয়ুব বাচ্চু প্লেব্যাক করেছেন—'লুটতরাজ', 'আম্মাজান', 'লাল বাদশা', 'তেজি', 'সাগরিকা', 'মিস ডায়না', 'মগের মুল্লক', 'চোরাবালি', 'কালো চশমা', 'ব্যাচেলর', 'বিলাত ফেরত মেয়ে', 'জবর দখল', 'আশা আমার আশা', 'স্পর্ধা' সিনেমায়।

এসব সিনেমা থেকে বেশ কয়েকটি গান আজও দর্শকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। যেমন: অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে, আমি তো প্রেমে পড়িনি, আম্মাজান, সাগরিকা বেঁচে আছি তোমারি ভালোবাসায়, স্বামী আর স্ত্রী বানাইছে কোন মিস্ত্রি, ভুলে গেছি জুতোর ফিতাটাও বাঁধতে। তবে দর্শকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত সিনেমার গান 'আম্মাজান'।

আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরের এনায়েত বাজারে। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের এই শিরোমণি তার প্রথম গান প্রকাশ করেন 'হারানো বিকেলের গল্প' শিরোনামে। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। তার প্রথম একক অ্যালবাম 'রক্তগোলাপ' প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে।

১৯৭৮ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন 'ফিলিংস' ব্যান্ডে। এরপর ১৯৮০ সালে 'সোলস' এর সঙ্গে শুরু হয় তার পথচলা। প্রায় এক দশক এই ব্যান্ডের সঙ্গেই ছিলেন তিনি।

'সোলস' ছাড়ার পর ১৯৯১ সালে গঠন করেন 'এলআরবি'। এলআরবির প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে।

আইয়ুব বাচ্চুর একক অ্যালবামগুলো হচ্ছে—ময়না (১৯৮৮), কষ্ট (১৯৯৫), সময় (১৯৯৮), একা (১৯৯৯), প্রেম তুমি কি (২০০২), দুটি মন (২০০২), কাফেলা (২০০২), প্রেম প্রেমের মতো (২০০৩), পথের গান (২০০৪), ভাটির টানে মাটির গান (২০০৬), জীবন (২০০৬), সাউন্ড অব সাইলেন্স (২০০৭), রিমঝিম বৃষ্টি (২০০৮), বলিনি কখনো (২০০৯) ও জীবনের গল্প (২০১৫)।

এলআরবির অ্যালবামগুলো হচ্ছে—এলআরবি (১৯৯২), সুখ (১৯৯৩), তবুও (১৯৯৪), ঘুমন্ত শহরে (১৯৯৫), ফেরারী মন (১৯৯৬), স্বপ্ন (১৯৯৬), আমাদের (১৯৯৮), বিস্ময় (১৯৯৮), মন চাইলে মন পাবে (২০০০), অচেনা জীবন (২০০৩), মনে আছে নাকি নেই (২০০৫), স্পর্শ (২০০৮) ও যুদ্ধ (২০১২)।

আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় কয়েকটি গান—চলো বদলে যাই, হাসতে দেখো গাইতে দেখো, কেউ সুখী নয়, ফেরারি এই মনটা আমার, একদিন ঘুম ভাঙা শহরে, বাংলাদেশ, কষ্ট পেতে ভালোবাসি, এখন অনেক রাত, হকার, এই রূপালি গিটার ফেলে, গতকাল রাতে, সেই তারা ভরা রাতে, মেয়ে তুমি কি দুঃখ চেন, সাড়ে তিন হাত মাটি, উড়াল দেবো আকাশে, কতদিন দেখেনি দু চোখ, মনে আছে নাকি নাই, কার কাছে যাব, লোকজন কমে গেছে, একটাই মন যখন তখন, এক আকাশের তারা তুই একা গুনিস নে, মন চাইলে মন পাবে...ইত্যাদি।

২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ৫৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু।

Comments

The Daily Star  | English

Trump, not Putin, budges

US president shifts stance after Alaska talks fall short of ceasefire

28m ago