জাকী ভাই না থাকলে আমার হয়ত অভিনয়ই করা হতো না: রাইসুল ইসলাম আসাদ
সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী পরিচালিত 'ঘুড্ডি' সিনেমায় অভিনয় করে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ। একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
একই পরিচালকের 'আয়না বিবির পালা' সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন।
সদ্য প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক সালাহউদ্দিন জাকীকে নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন অভিনয়শিল্পী রাইসুল ইসলাম আসাদ।
তিনি বলেন, 'আমি ভাষাহীন, স্তব্ধ, কিছুই বলতে পারছি না। জাকী ভাই নেই এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। যদিও প্রকৃতির নিয়মে সবাইকে চলে যেতে হবে, তারপরও কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না, মেনে নেয়ার মতো না। আমিও প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে ভাষাহীন হয়ে গেছি।'
'সালাহউদ্দিন জাকী ভাইকে নিয়ে বলে কী শেষ করা যাবে? কখনোই না। তাকে নিয়ে বলতে চাইলে দিনের পর দিন বলতে পারব। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক শিল্প ভাবনার মানুষ। শিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা তুলনাহীন। তার ভাবনায় কেবলই ছিল সিনেমা, নাটক, শিল্প,' বলেন তিনি।
স্মৃতিচারণ করে রাইসুল ইসলাম আসাদ বলেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরিচয়ও মুক্তিযুদ্ধের সময়টায়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সাল থেকে আমরা একসাথে, ঢাকা থিয়েটারের হয়ে বছরের পর বছর পার করেছি। ঢাকা থিয়েটার করতে গিয়ে তাকে চিনেছি, বুঝেছি, তার কাছ থেকে শিখেছি।'
'ঢাকা থিয়েটার করার আগে নাট্যচক্র, ড্রামা সার্কেল -এ জাকী ভাইয়ের সাথে অনেক স্মৃতি আছে। সবকিছু আজ চোখের সামনে ভাসছে। সবচেয়ে বেশি স্মৃতি ঢাকা থিয়েটারে। সেসব কি ভুলা যায়?,' বলেন তিনি।
'তার অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ঘুড্ডি, যা একটি অনন্য চলচ্চিত্র। ঘুড্ডিতে আমি ও সুবর্ণা মুস্তাফা একসাথে অভিনয় করি। সিনেমাটি সুপার হিট করে। কিন্তু অভিনয় ছাড়াও আমি তার সাথে সহকারি হিসেবে কাজ করেছি অনেকদিন। অভিনয় না করলেও তার সহকারী হিসেবে থাকা হত।'
'আমার তো অভিনয়ই করার কথা ছিল না। সবকিছু সম্ভব হয়েছে জাকী ভাইয়ের জন্য। তিনি আমাকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে নিয়েছেন। তার জন্যই আমাকে অভিনয় করতে হয়েছে। সেজন্য মাঝে মাঝে ভাবি, জাকী ভাই না থাকলে আমার হয়ত অভিনয়ই করা হতো না,' বলেন তিনি।
রাইসুল ইসলাম আসাদ আরও বলেন, 'আমার অভিনেতা হওয়ার জন্য যাদের অবদান বেশি, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জাকী ভাই। তার কথা ভুলব কেমন করে? এজন্য তার চির বিদায়ের খবরটি শোনার পর থেকে মনটা পাথর হয়ে আছে।'
Comments