সুরের আলোয় ঝলমলে রুনা লায়লার ৬০ বছরের সংগীত জীবন

রুনা লায়লা। ছবি: স্টার

সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ করলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সুরের আলোয় ঝলমলে তার বর্ণাঢ্য গানের জীবন।

সিনেমার গানে তাঁর যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যৌথ প্রযোজিত 'জুগনু' সিনেমায় প্লে ব্যাকের মাধ্যমে। ১৯৬৪ সালের ২৪ জুন মাত্র ১২ বছর বয়সে 'গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি' গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি।

সেই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শওকত আকবর, খলিল, শর্মিলী আহমেদ। গানটির কথা লিখেছিলেন তিসনা মেরুতি, কম্পোজ করেছিলেন মানজুর। আশরাফ আলী খান প্রযোজিত সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন মামনুন খান। এতে রুনার বড় বোন দীনা লায়লাও প্লেব্যাক করেছিলেন।

সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৬৮ সালের ২৯ মার্চ। সেই হিসেবে আজ তার সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ হলো। 

এ প্রসঙ্গে রুনা লায়লা  বলেন, 'এখনো গান গাইতে পারছি, সুর করছি। তার চেয়েও বড় কথা- সফলতার ছয় দশক উপভোগ করে যেতে পারছি। এটা যে কত বড় সৌভাগ্যের, কত বড় প্রাপ্তি; তা আসলে ভাষায় প্রকাশের নয়। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা, যে শ্রদ্ধা পেয়েছি, তা আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।'

আজ সোমবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে চ্যানেল আইতে অনন্যা রুমার প্রযোজনায় রুনা লায়লাকে নিয়ে সরাসরি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়েছে। এতে ইমরান, কোনাল, ইউসুফ, লুইপা, ঝিলিকসহ কয়েক শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন। 

প্রথম প্লেব্যাকের 'জুগনু' সিনেমার পর পাকিস্তানের আরও সিনেমায় গান করেছেন রুনা লায়লা। এর মধ্যে উল্লেখযোগগ্য হলো  'হাম দোনো', 'রিশতা হ্যায় পেয়ার কা', 'কমান্ডার', 'আন্দালিব', 'নসীব আপনা আপনা', 'দিল অউর দুনিয়া', 'উমরাও জান আদা', 'আনমোল', 'নাদান',' দিলরুবা' ।

মুক্তিযুদ্ধের আগেই রুনা লায়লা বাংলাদেশের সিনেমায় প্রথম প্লেব্যাক করেন। 'গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে' শিরোনামের গানটি ১৯৭০ সালের ২৯ মে মুক্তিপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম পরিচালিত 'স্বরলিপি' সিনেমার। এই গান লিখেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুর করেন সুবল দাস। গানটিতে লিপসিং করেন ববিতা। প্রথম প্লেব্যাকেই সাড়া ফেলেন রুনা লায়লা। 

এর পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এসে তিনি একে একে 'জীবন সাথী', 'টাকার খেলা', 'জিঘাংসা', 'আলো তুমি আলেয়া', 'লাভ ইন সিমলা', 'প্রতিনিধি', 'কাজল রেখা', 'রং বেরং', 'দি রেইন', 'যাদুর বাঁশি', 'সুন্দরী', 'দি ফাদার', 'কসাই', 'দেবদাস', 'এক্সসিডেন্ট', 'চাঁদনী', 'দোলনা', 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত', 'অন্ধপ্রেম', 'দোলা', 'অন্তরে অন্তরে', 'বিক্ষোভ', 'প্রিয়া তুমি সুখী হও',  'দুই দুয়ারী'সহ আরও বহু সিনেমায় গান করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। 

আধুনিক গানেও ভক্তদের মন জয় করেছেন রুনা লায়লা। তার গাওয়া  উল্লেখযোগ্য  আধুনিক গান হলো 'যখন থামবে কোলাহল', 'পাখি খাঁচা ভেঙ্গে উড়ে গেলে', 'বন্ধু তিনদিন তোর', 'পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম', 'প্রতিদিন তোমায় দেখি', 'ভাষার জন্য যারা দিয়ে গেছো প্রাণ', 'শেষ করোনা শুরুতে খেলা' ইত্যাদি।

গানে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের  বিভিন্ন দেশ থেকে তিনশর বেশি সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই জীবন্ত কিংবদন্তি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Iran fires back at Israel after onslaught targets nuclear facilities

Air raids sirens and explosions rang out across Israel after Prime Minister Benjamin Netanyahu took to the airways to issue a word of caution, saying he expected "several waves of Iranian attacks" in response

10m ago