আমাদের সময় অনেক প্রতিযোগিতা ছিল: চিত্রনায়ক নাঈম

নাঈম। ছবি: সংগৃহীত

নব্বই দশকে 'চাঁদনী' সিনেমা দিয়ে রূপালি পর্দায় আগমন ঘটে একজন নায়কের। তিনি নাঈম। প্রথম সিনেমা দিয়েই বাজিমাত করেন। তারপর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ঢাকাই সিনেমায় তার শক্ত অবস্থান গড়ে ওঠে কয়েক বছরে। 'চাঁদনী' ইতহাস সৃষ্টি করে। তারপর অসংখ্য চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন তিনি।

এখন চলচ্চিত্র থেকে অনেক দূরে তিনি। তবে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জুরি বোর্ডের সদস্য হয়েছেন।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন চিত্রনায়ক খাজা নাঈম মুরাদ

দ্য ডেইলি স্টার: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য গঠিত জুরি বোর্ডের সদস্য হয়েছেন। কেমন লাগছে?

নাঈম: এক কথায় যদি বলি তাহলে বলব—ভালো লাগছে। অনেক ভালো লাগছে। আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা। অনেকদিন পর অনেকগুলো সিনেমা দেখার সুযোগ হয়েছে সদস্য হওয়ার পর। আমাদের সিনেমার কতটুকু উন্নতি হয়েছে, তা দেখার সুযোগ পেলাম। কীভাবে চলছে আমাদের সিনেমা। সব ধরনের সিনেমা দেখেছি সদস্য হওয়ার পর। ব্যাপারটি উপভোগ করছি।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: নব্বই দশকে ঢাকাই সিনেমায় এসেই বাজিমাত করেন। তারপর দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তখনকার আর এখনকার মধ্যে কী পার্থক্য মনে হচ্ছে?

নাঈম: আমদের সময় অনেক প্রতিযোগিতা ছিল। অসংখ্য সিনেমা নির্মিত হতো। সিনেমার বাজার বড় ছিল। প্রেক্ষাগৃহে ছিল রেকর্ডসংখ্যক। প্রায় দেড় হাজার ছিল। অনেক বড় বড় তারকারা ছিলেন রূপালি পর্দায়। শ্রদ্ধেয় জসিম, নায়করাজ রাজ্জাক থেকে শুরু করে বড় বড় তারকারা ছিলেন। বড় বড় পরিচালকরা ছিলেন। বড় বড় স্ক্রিপ্ট রাইটাররা ছিলেন। আমজাদ হোসেন থেকে শুরু করে কে ছিলেন না পরিচালক? আমার মনে হয় আগেকার সময়ের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক না।

এখন সিনেমা মুক্তি দেবে কোথায়? হলই তো নেই। অল্প কিছু হল আছে। হল থাকতে হবে তো। সিনেমা বড় ব্যাপার। এজন্যই বড় পর্দা বলা হয়ে থাকে। যদি অনেকগুলো হল থাকত, অনেক পরিচালক থাকতেন, অনেক প্রযোজক থাকতেন, তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। এজন্যই তুলনা করতে চাই না। দুটো দুই সময়ের গল্প।

ডেইলি স্টার: ঢাকাই সিনেমার ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে কতটা আশাবাদী?

নাঈম: দেখুন, নতুনরা আসছেন। এটা ক্রিয়েটিভ কাজ। নতুন নতুন পরিচালক আসছেন। চিত্রগ্রাহক আসছেন। ফটোগ্রাফিতে দারুণ উন্নতি হয়েছে। সাউন্ড ডেভেলপ করেছে। ভালো সিনেমা হচ্ছে। সময় লাগবে এর জন্য। টেকনিশিয়ানের অনেক অভাব আছে। কাহিনিকারের অভাব আছে। নতুন সিনেমা বানাচ্ছে। সংখ্যায় কম।

তারপরও আমি আশাবাদী। অভিনয়ের মান বেড়েছে। নতুনরা ভালো করছেন।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: আপনার শুরুটাই তো একটা ইতিহাস ঢাকাই সিনেমায়...

নাঈম: তা বলতে পারেন। 'চাঁদনী' সিনেমা একটা ইতিহাস বটে। ১৯৯১ সালের ৪ অক্টোবর 'চাঁদনী' মুক্তি পায়। সেই সময়ে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা যেভাবে সিনেমাটিকে গ্রহণ করেছিল, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। রেকর্ড গড়েছিল। এখনো মানুষ 'চাঁদনী'র কথা বলেন। এখনো মানুষের ভালোবাসা পাই।

ডেইলি স্টার: 'চাঁদনী' সিনেমার নায়িকা শাবনাজ আপনার জীবনসঙ্গী। দীর্ঘজীবন একসঙ্গে থাকার মূলমন্ত্র কী?

নাঈম: বিশ্বাস, ভালোবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ। সংসারজীবনে দুজন দুজনকে সম্মান করতে হবে। ভালোবাসতে হবে। বিশ্বাস থাকতে হবে। আমাদের সংসারে এখন দুই কন্যা। তাদের নিয়েই আমার সবকিছু।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: আপনি কখনো শহরে কখনো গ্রামে বসবাস করেন...

নাঈম: ছোটবেলা থেকেই গ্রাম ভালোবাসি। গ্রামকে পছন্দ করি। গ্রামের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই যোগাযোগ। আমার নানাবাড়ি টাঙ্গাইলের করোটিয়ার জমিদার বাড়ি। আমার আব্বার দাদা হচ্ছেন নবাব সলিমুল্লাহ। ঢাকার নবাববাড়িই আমাদের পূর্বপুরুষের বাড়ি।

আমার আব্বা কৃষি প্রজেক্ট করতেন এবং ভালোবাসতেন। তার কাছ থেকে দেখা। আব্বারটাই চলমান আছে। আমি অনেক বছর ধরে কৃষি প্রজেক্ট করি। মাছের খামার আছে। গরুর খামার আছে। সবজির বাগান আছে। এসব করে আনন্দ পাই। টাঙ্গাইলের পাতরাইলে এসব করি। মাঝেমধ্যেই ওখানে চলে যাই। ভালো লাগে আমার।

Comments

The Daily Star  | English

Thousands of crores of taka of citizens wasted on unnecessary projects: commerce adviser

The adviser, however, added that liabilities of foreign-funded projects should still be repaid

52m ago