‘নায়িকা না হলে কিংবা বুড়ো না হলে পুরস্কার পাওয়া যায় না’

মনিরা মিঠু। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী মনিরা মিঠু বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া পেয়েছেন। 

তার অভিনয় দর্শকদের কাঁদায়, হাসায়, আনন্দ দেয়। সম্প্রতি 'ক্ষতিপূরণ' নাটকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে অসংখ্য মানুষকে কাঁদিয়েছেন। 

তার অভিনীত অনেকগুলো ভালো নাটক সম্প্রতি প্রচার হয়েছে। সবশেষ তিনি 'দাগি' সিনেমায় অভিনয় করেছেন ।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে অভিনয় জীবনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন মনিরা মিঠু।

সম্প্রতি 'ক্ষতিপূরণ' নাটকে অভিনয় করে দর্শককে কাঁদিয়েছেন। এটা নিয়ে জানতে চাই।

মনিরা মিঠু। ছবি: সংগৃহীত

মনিরা মিঠু: এটাই আমার পুরস্কার। দর্শকদের ভালোবাসাকে বড় পুরস্কার মনে করি। 'ক্ষতিপূরণ' নাটকে খুব বেশি দৃশ্য ছিল না। যতটুকু ছিল মানুষ গ্রহণ করেছেন, প্রশংসা করেছেন। 

কাছাকাছি সময়ে আরও কয়েকটি নাটক প্রচার হয়েছে। সেগুলোর জন্যও দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছি। কোনোটি কমেডি ঘরানার, কোনোটি সিরিয়াস নাটক।

প্রচুর নাটক করেন, কিন্তু সিনেমায় কম কেন?

মনিরা মিঠু: সত্যি কথা বলতে  সিনেমায় নারীদের চরিত্রের প্রাধান্য কম থাকে, উপস্থিতিও কম থাকে, সেজন্য কম করি। অনেক বছর পর 'দাগি' সিনেমা করেছি। এই সিনেমায় অভিনয় করেও ভালো সাড়া পেয়েছি।

আপনি যেকোনো চরিত্রের সঙ্গে মিশে যান, কীভাবে সম্ভব?

মনিরা মিঠু: আমি মনে করি, এটা প্রদত্ত পাওয়া। আমার তো মঞ্চের কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। যতটুকু করছি তার সম্পূর্ণ পেয়েছি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে, তার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ। আমি যে চরিত্রটি করি সে চরিত্রের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করি।

ঢাকার বাইরে গেলে মানুষের ভালোবাসা কতটা পান?

মনিরা মিঠু: মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসে। যেমন, ঢাকা্র বাইরে যদি সমুদ্র দেখতে যাই, ঠিকমতো সমুদ্র দেখতে পারি না। ঢাকার বাইরের কোনো শপিংমলে গেলে, সেখানেও ঠিকমতো কেনাকাটা করতে পারি না। কারণ, মানুষ ভিড় করে। এটাকে আমি নেতিবাচকভাবে দেখি না, ইতিবাচকভাবেই দেখি। মানুষ কাছে আসে, সম্মান করে, কেউ পায়ে ছুঁয়েও সালাম করে। চোখ ভিজে আসে মানুষের ভালোবাসায়।

দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

মনিরা মিঠু: দর্শকরাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। সিনেমার সঙ্গে টক্কর দিয়ে নাটক টিকে আছে। এত বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ধস নামে কখনো কখনো, কিন্তু নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে ধস নামেনি। যদিও তুলনা করা ঠিক না, তারপরও বললাম কথাটা।

আরেকটু বলি, একটি নাটকের টিমের সবার অবদান আছে। প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে যারা আছেন, সবাই পরিশ্রম করেন। শতভাগ ভালোবাসা দিয়ে কাজ করেন। সবার ভালোবাসা নিয়ে একটি নাটক হয়।

অনেকেই অভিযোগ করেন, দর্শক আগের  মতো নাটক দেখে না। এটা নিয়ে আপনার কোনো মন্তব্য?

মনিরা মিঠু: এটা ঠিক না। অনেক মানুষ নাটক দেখেন। আমার কথা বলি, শুধু দেশে নয়, বিদেশেও আমার প্রচুর ভক্ত আছেন। তারা তো কাজ দেখেই ভালোবাসেন। নাটকই বেশি করি, লন্ডন, আমেরিকা থেকে প্রচুর ভক্তরা অভিনয় নিয়ে কথা বলেন, যেতে বলেন। সম্মান ও ভালোবাসা থেকেই নিশ্চয়ই করেন। কলকাতায় আমার প্রচুর ভক্ত আছেন। কলকাতা থেকে অনেকেই বলেন, কবে আসবেন? শহর-গ্রাম যেখানেই যাই, মানুষ নাটক নিয়ে কথা বলেন। সুতরাং, নাটক দেখেন বলেই তো কথা বলেন।

পুরস্কার পাওয়া নিয়ে কিছু বলবেন কি?

মনিরা মিঠু: প্রতি বছর বিভিন্ন পুরস্কারে আমার করা ২০টি নাটক হয়তো  নমিনেশন পায়। কিন্তু ট্রাজেডি হচ্ছে—নায়িকা না হলে কিংবা থুরথুরে বুড়ো না হলে পুরস্কার পাওয়া যায় না। এখানে নারী শিল্পী হিসেবে নায়িকারা পুরস্কার পান, নয়তো বুড়ো হওয়ার পর আজীবন সম্মাননা পান।

Comments

The Daily Star  | English
July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

Denigration of our Liberation War will never be acceptable

12h ago