এত উচ্ছ্বাস অনেকদিন দেখিনি: চঞ্চল চৌধুরী

জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এখন পর্যন্ত তিনি যতগুলো সিনেমায় অভিনয় করেছেন, প্রায় সবগুলোই দর্শক প্রশংসায় ভেসেছে। সবশেষ তার অভিনীত 'উৎসব' সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।
'মনপুরা' সিনেমায় 'সোনাই' চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন কেড়ে নেন তিনি। সেই যে তার পথচলা শুরু হলো সিনেমায়, এখনো অব্যাহত আছে। 'দেবী' সিনেমায় মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করে তুমুলভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। 'আয়নাবাজি' সিনেমায় বাজিমাত করেন চঞ্চল চৌধুরী। এই সিনেমাটি যেমন সাড়া ফেলে, একইভাবে তার অভিনয়ও লুফে নেন দর্শকরা।
'হাওয়া' সিনেমা যখন মুক্তি পেল, সেই সময়ও তুমুলভাবে প্রশংসিত হয় তার অভিনয়। সেই সময়ে কলকাতায় গিয়েও দর্শকদের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। 'মনের মানুষ' সিনেমাও তাকে দিয়েছে খ্যাতি।
এদিকে, ঈদে মুক্তি পাওয়া 'উৎসব' সিনেমার রেশ এখনো কাটেনি। এই সিনেমার জোয়ার টানা অনেকদিন চলেছে প্রেক্ষাগৃহে। দর্শকরা টিকিট না পেয়ে ফিরেও গেছেন। এখন তো 'উৎসব' ওটিটিতেই দেখা যায়। এই সুবাদে নতুন নতুন দর্শক মিলছে সিনেমাটির।
দ্য ডেইলি স্টারকে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, সিনেমার গল্প যদি ভালো হয়, শিল্পীদের অভিনয় যদি ভালো হয়, নির্মাতা যদি সেভাবে চেষ্টা করেন, তাহলে একটি সুন্দর সিনেমা হওয়া সম্ভব। দর্শক তখন আসবেই। 'উৎসব' সিনেমার জন্য প্রচুর দর্শক হলমুখী হয়েছেন।
'উৎসব সিনেমার প্রচার কিন্তু মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি অনেক ইতিবাচক যেকোনো সিনেমার জন্য। একজন দর্শক দেখে আরেকজনকে বলেছেন, আরেকজন দেখে অন্যজনকে বলেছেন...'
এই অভিনেতা বলেন, মুক্তির সময়গুলোতে অনেকগুলো হল ভিজিট করেছি। সেইসময় দেখেছি, বাচ্চারাও হলে এসেছে বাবা-মায়ে হাত ধরে। বয়স্করাও এসেছেন। এত ভালো লাগা, এত উচ্ছ্বাস অনেকদিন দেখিনি।
সিনেমাটি নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, 'উৎসব' সিনেমায় নির্মল বিনোদন আছে। নির্মল আনন্দ আছে। সিনেমার সঙ্গে জার্নিটা দারুণ। এজন্যই দর্শকরা দেখেছেন।
জাহিদ হাসান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা যখন অভিনয় শুরু করি, সেই সময় জাহিদ হাসানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা। মাঝে তিনি কাজ করেননি। কিন্তু সুযোগ পেয়ে আবার তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে, অভিনেতা হিসেবে তিনি সেরা।
'জাহিদ হাসানের অনবদ্য অভিনয় দর্শকরা গ্রহণ করেছেন। যার অভিনয়ের ক্ষমতা আছে, তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। জাহিদ হাসান কাঁদাতে পারেন, হাসাতেও পারেন। তিনি একা ক্রেডিট নিতে চান না। তার বক্তব্য, "তোমরা না থাকলে হতো না"।'
এক প্রশ্নের জবাবে চঞ্চল বলেন, নব্বই দশকের অনেক দর্শক জানেন কী সময় তারা পার করে এসেছেন, তারাও সিনেমাটি দেখতে হলে এসেছেন। এই সিনেমায় আফসানা মিমি আছেন, তিনি দারুণ করেছেন। জয়া আহসান, অপি করিম ভালো করেছেন। সাদিয়া আয়মান ও সৌম্য ভালো করেছেন। সবাই ভালো করেছেন।
পরিচালক তানিম নূর সম্পর্কে তিনি বলেন, একটি ভালো সিনেমার জন্য যেখানে যাকে দরকার সেভাবেই কাজটি করেছেন পরিচালক। চরিত্র ছোট নাকি বড় এটা আমরা কেউ ভাবিনি। খুব আন্তরিক হয়ে কাজ করেছি। সবাই আন্তরিকভাবে কাজটি করেছি।
অনেকেই বলেন, আপনার সিনেমা ভাগ্য ভালো। আপনি কী মনে করেন? জানতে চাইলে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, কিছুটা ভাগ্য আছে। কিন্তু শুধু ভাগ্য দিয়ে হয় না। কর্ম করতে হবে। আমি জেনে-বুঝে কাজ করি। সঠিক প্রজেক্টে কাজ করব কি না, এই ভাবনাটা ভাবায়। ভালো গল্প, ভালো চরিত্র, পরিচালক—এসব নিয়েও ভাবি।
'প্রতিদিন ভালো চরিত্র, ভালো গল্প পাব না। ১০০টা স্ক্রিপ্ট এলে সেখান থেকে দুটো বা তিনটি নিতে হবে। সব গল্পের গ্রহণযোগ্যতা সমান না। অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। আমার কাজ যখন ভালো লাগে, তখন ভাবি—এটা ধরে রাখতে হবে।'
বর্তমানে চঞ্চল আছেন কলকাতায়। ব্রাত্য বসুর পরিচালনায় নতুন একটি সিনেমায় অভিনয় করবেন। অক্টোবরে থেকে শুটিং শুরু হবে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোট গল্প নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হবে। সিনেমার নাম 'শেকড়'। চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করবেন অন্যতম প্রধান একটি চরিত্রে।
Comments