পাঠক যখন লেখক

স্বাস্থ্যকর দেশের তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ!

এই রিকশাচালক যে খুব সুখী, তা তার হাসি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সম্ভবত তার সুখী হওয়ার কারণ হলো, বর্তমানে অনেকেরই কোনোকিছু চালানোর সামর্থ্যই নেই। কিন্তু আমরা জানি যে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এই সুখী চালকের জীবনযাত্রাকেও হ্যাম্পার করবে। আপনিই শুধু একমাত্র ব্যক্তি নন, যিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। আমাদের কেবল একটি ছবির দরকার ছিল। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

২০৫০ সাল। এইমাত্র জাতিসংঘের ঘোষণা থেকে জানা গেল, বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর দেশ হলো বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে রোল মডেল হিসেবে অনুসরণ করতে অন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে এখন আর কেউ বহুমূত্র রোগে ভুগছেন না এবং প্রত্যাশিত জীবনসীমা পৌঁছেছে ১২০ বছরে।

ওজন বৃদ্ধি বলতে যে কিছু আছে, তা মানুষের আজ আর মনেই নেই। সবাই দারুন ছিপছিপে ও স্বাস্থ্যবান। সরকার সব হাসপাতালকে সিনেপ্লেক্স বানিয়ে ফেলতে যাচ্ছে। কারণ, এখন আর কেউ অসুস্থ হচ্ছেন না।

চিকিৎসকরা এখন ডাক্তারি ছেড়ে ইনফ্লুয়েন্সার হচ্ছেন। ওষুধের দোকান সব বিলুপ্তপ্রায়। এই দেশের মতো বিশুদ্ধ বাতাস পৃথিবীর আর কোথাও নেই। নাগরিকদেরও সুখের সীমা নেই।

তবে ব্যাপারগুলো যে সবসময় একইরকম ছিল, তা নয়। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশগুলোর একটি। এখানকার মানুষ বাড়তি ওজন ও দূষিত বাতাসের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগত। নাগরিকদের বেশিরভাগ সময় কেটে যেত যানজটে। পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপ হতে থাকে। সুখ তো দূরের ব্যাপার, বেঁচে থাকাটাই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে তৎকালীন সরকার চমৎকার একটি পরিকল্পনা নিয়ে আসে।

২০২২ সালের ৬ আগস্ট রাতারাতি এই দেশে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস ভাড়া সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। তারা গন্তব্যে যেতে শুরু করেন হেঁটে হেঁটে। মোটরসাইকেল চালকরা তাদের বাইকগুলো ফেলে পরিবেশবান্ধব বাইসাইকেল কিনে ফেলেন।

সব ধরনের খাবারের দামও বেড়ে যায়। তাই মানুষ খাওয়া কমিয়ে দেয়। বিপরীতে শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানোর কারণে ক্রমান্বয়ে দেশের মানুষ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিরোগ ও স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে। পাশাপাশি সবাই বাইসাইকেল ব্যবহার করতে শুরু করায় দেশের বাতাস হয়ে ওঠে পুরো পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নির্মল।

এর সব কিছুই সম্ভব হয়েছিল তৎকালীন সরকারের পাশার দান ওল্টানো সেই সিদ্ধান্তের ফলে। বর্তমানে ৬ আগস্ট একটি জাতীয় ছুটির দিন এবং দিবসটি পালন করা হয় 'পাশার দান উল্টানোর দিন' হিসেবে। সমগ্র দেশের মানুষ এদিন শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তৎকালীন সরকারের এই উদ্যোগকে স্মরণ করে।

অনুবাদ করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

10h ago