৫০ বছর পর বড়পর্দায় শোলের আনকাট সংস্করণ

শোলে সিনেমার পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডে ৫০ বছর আগে দারুণ সাফল্যের পর আবার বড়পর্দায় ফিরে আসছে শোলে। রমেশ সিপ্পির ১৯৭৫ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রের সম্পূর্ণ রিস্টোরড, আনকাট সংস্করণ বিশ্বপ্রিমিয়ার হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী শুক্রবার ইতালির বলোনিয়ার একটি উৎসবে সিনেমাটি দেখানো হবে। এই সংস্করণে রয়েছে ছবির মূল সমাপ্তি, যা আগে সেন্সরের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। বাদ দেওয়া দৃশ্যগুলোও যোগ করা হয়েছে।

এছাড়া সিনেমাটি উৎসবের ঐতিহাসিক পর্দার বাইরে পিয়জ্জা ম্যাগিয়োরে দেখানো হবে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম ভেন্যু।

সিনেমাটির চরিত্র ও সংলাপ লিখেছেন সালিম জাভেদ। এতে অভিনয় করেছেন—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুরি, সঞ্জীব কুমার ও আমজাদ খান।

প্রথম মুক্তির সময় শোলে মুম্বাইয়ের এক হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে পাঁচ বছর ধরে টানা চলেছিল। পরে বিবিসি ইন্ডিয়ার পোলে 'ফিল্ম অব দ্য মিলেনিয়াম' এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পোলে সর্বকালের সেরা ভারতীয় সিনেমা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সিনেমাটির গানের রেকর্ড ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল প্রায় পাঁচ লাখ কপি।

সিনেমাটি শুধু বক্স অফিস নয়, ভারতীয় সংস্কৃতির অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। কারণ এর সংলাপগুলো বিয়ে, রাজনীতির ভাষণ ও বিজ্ঞাপনে প্রায়ই ব্যবহার করা হয়।

অভিনেতা ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, 'শোলে বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।' তিনি সিনেমাটিতে গ্রামের এক চোরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

অমিতাভ বচ্চন বলেন, 'শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা ছিল দারুণ। যদিও আমি তখন জানতাম না, এটি ভারতীয় সিনেমার আইকনিক কাজ হয়ে উঠবে।'

ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিল্পী শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গরপুর মনে করেন, নতুন রিস্টোরড সংস্করণ শোলের সর্বাধিক বিশ্বস্ত সংস্করণ।

মূল সংস্করণে গব্বর সিং মরে যায়—ঠাকুরের কাঁটা লাগানো জুতায় চাপা পড়ে। কিন্তু সেন্সররা আপত্তি করে। তারা 'সাবেক পুলিশ অফিসারের আইন নিজের হাতে নেওয়ার' ধারণা মানতে পারেননি এবং সহিংসতা বেশি বলে মনে করেছিলেন। তখন জরুরি পরিস্থিতির কারণে সেন্সররা আরও কঠোর ছিল।

তারা রাজি না হলে, সিপ্পিকে বাধ্য হয়ে সমাপ্তি পুনরায় শুট করতে হয়। সবাইকে দ্রুত রামনাগরামের পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, যেটি পরিণত হয়েছিল রামগড় গ্রামে। নতুন সমাপ্তিতে গব্বরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সিনেমাটি সেন্সর ছাড় পায়।

এই মহাকাব্যিক সিনেমাটি পুনরায় আনার তিন বছর চ্যালেঞ্জময় ছিল। অনেক অংশের আসল প্রিন্ট ছিল না, আর নেগেটিভ ছিল অনেকটাই নষ্ট।

কিন্তু ২০২২ সালে সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি মুম্বাইভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা খুঁজে পান বহু আর্কাইভ। মুম্বাইয়ের একটি ওয়্যারহাউসে ছিল মূল ৩৫ মিমি ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ।

এতে শেষ হয়নি। যুক্তরাজ্য থেকে পাওয়া আরও কিছু রিল ছিল আন-লেবেলড। এগুলো ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায় বোলোগনাতে পাঠানো হয়। এখানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ফিল্ম রিস্টোরেশন প্রতিষ্ঠানের অবস্থান।

যদিও ৭০ মিমি প্রিন্ট নষ্ট, নেগেটিভ নষ্ট। তারপরও ভারত ও যুক্তরাজ্যের দুই প্রতিষ্ঠানের চেষ্টায় ধীরে ধীরে পুনঃসংযোজন করে। এমনকি খুঁজে পান মূল ক্যামেরা, যেটি সিগনেচার শটগুলো নিয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Govt move to hike port charges sparks concern

This will likely have a detrimental effect on the country's exports, alongside prices of imported products in domestic markets.

10h ago