মানুষের ভালোবাসা সবচেয়ে বড় পাওয়া: আফসানা মিমি
'পাপ পুণ্য' সিনেমার জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন অভিনেত্রী আফসানা মিমি। নব্বই দশক থেকেই টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকের প্রিয়মুখ তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক দর্শকনন্দিত নাটকে অভিনয় করে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। প্রশংসিত হয়েছেন কিছু সিনেমায় অভিনয় করেও। এ ছাড়া পরিচালক হিসেবেও তিনি সফল।
অভিনয় ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন আফসানা মিমি।
দ্য ডেইলি স্টার: দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন। কেমন লাগছে?
আফসানা মিমি: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া মানে তো রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়া। এটি রাষ্ট্রীয় একটি পুরস্কার। অনেক দিন ধরে মঞ্চে, টেলিভিশনে অভিনয় করছি। সিনেমাও করছি। আমি মনে করি, মানুষের ভালোবাসা সবচেয়ে বড় পাওয়া। কিন্তু জাতীয় পুরস্কারটাও অনেক গুরুত্বের। এটা আলাদা একটা গুরুত্ব বহন করে।
ডেইলি স্টার: প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নেওয়ার সময় কোনো কথা হয়েছে কি?
আফসানা মিমি: প্রিয় একটি কাজের জন্য পুরস্কারটি পেয়েছি। প্রিয় মানুষের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছি। এটা অবশ্যই ভালো লাগার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ভীষণ প্রিয় মানুষ, শ্রদ্ধার মানুষ। প্রিয় মানুষের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তার অনুভূতি জানিয়েছেন। তাকে বলেছি, বাবাকে নিয়ে এসেছি পুরস্কার নিতে।
ডেইলি স্টার: আপনার জীবনে এমন কেউ আছে, যার কাছে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ?
আফসানা মিমি: আছে। তার নাম জমিলা। প্রিয় জমিলা আপা। জমিলা আপা আমার সারাজীবনের সাথী। ৩০ বছর ধরে আমার সঙ্গে আছেন। আমার সুখ-দুখের সাথী তিনি। আমার সারাজীবনের ক্যারিয়ারে তার অবদান অনেক। জাতীয় পুরস্কার গ্রহণের দিন যদি একজন মানুষকেও নেওয়ার অনুমতি থাকত, তাহলে তাকেই সঙ্গে নিতাম। চাঁদপুরে যখন 'পাপ পুণ্য' সিনেমার শুটিং করেছি, তখনো জমিলা আপা ছিলেন। আমার সব কাজের সঙ্গী তিনি।
ডেইলি স্টার: 'পাপ পুণ্য' সিনেমার জন্য পুরস্কারটি পেলেন...
আফসানা মিমি: গিয়াস উদ্দিন সেলিম আমার প্রিয় বন্ধু, প্রিয় পরিচালক। আমি পরিচালনা নিয়ে ছিলাম, অভিনয়ে মাঝে বিরতি ছিল। নতুন করে ফেরা হয়েছে সেলিমের 'পাপ পুণ্য' দিয়ে। খুব ভালো একটি সিনেমা। যার জন্য পুরস্কার পেলাম। তা ছাড়া চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে 'পাপ পুণ্য' দিয়েই প্রথম কাজ আমার। চঞ্চল অসাধারণ অভিনেতা। সিয়ামের সঙ্গে আগে একটি নাটক করেছিলাম। তখনই সিয়ামকে বলেছিলাম, যদি কখনো সুযোগ হয়, মা-ছেলের ভূমিকায় যেন আমরা অভিনয় করতে পারি। সেটা হয়েছে পাপ পুণ্য সিনেমায়। চঞ্চল ও সিয়াম সম্পর্কে বলতে চাই, দুজনেই চমৎকার ভালো মানুষ। এইরকম দুজন ভালো মানুষের সঙ্গে একই সিনেমায় অভিনয় করতে পেরেছি।
ডেইলি স্টার: সম্প্রতি আপনার অভিনীত পাতালঘর ওয়েব ফিল্মটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে...
আফসানা মিমি: পাতালঘর ওয়েব ফিল্মের শুটিং করেছিলাম করোনার সময়। সম্প্রতি এটি প্রচারিত হয়েছে। সবার কাছ থেকে ভালো ভালো মন্তব্য শুনেছি। প্রশংসা শুনেছি। ভালো লাগে এমন ইতিবাচক মন্তব্য শুনে।
ডেইলি স্টার: নতুন করে মঞ্চে ফিরছেন?
আফসানা মিমি: নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় আমার দল। এই দলের নতুন নাটক দর্পণ, যেখানে অভিনয় করতে যাচ্ছি। নাটকটি নির্দেশনা দিচ্ছেন নায়লা আজাদ নুপুর আপা। মহড়া চলছে। আশা করছি ভালো কিছু হবে।
ডেইলি স্টার: মানুষের ভালোবাসা, জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তারপরও অপূর্ণতা আছে কি?
আফসানা মিমি: না, কোনো অপূর্ণতা নেই। আমার নিজের দিক থেকে, নিজেকে আরও তৈরি করতে হবে—এই ধরনের অপূর্ণতা থাকতে পারে। কিন্তু অভিনয়জীবন নিয়ে কোনো অপূর্ণতা নেই। অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি। নতুন জেনারেশনও আমার অভিনয় দেখার পর প্রশংসা করে। তারাও আমাদের কাজ দেখে। পাতালঘর কিংবা মহানগর নতুন জেনারেশন দেখে প্রশংসা করে। হুমায়ুন আহমেদের নাটকে অভিনয় করেছি। সেসব নতুন জেনারেশন দেখে। কাজেই মানুষের এই ভালোবাসার কাছে অপূর্ণতা থাকবার কথা নয়।
Comments