রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে ভাঙন, ৮৭ মিটার ব্লকে ধস
পদ্মা নদীতে ভাঙনের ফলে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার বড়চর বেনীন এলাকায় পদ্মার তীররক্ষা ব্লকের ৮৭ মিটার ধসে গেছে। ওই এলাকার অন্তত ৩ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বড়চর বেনীনগর, কাকিলাদাইর, মহাদেবপুর গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। বড়চর বেনীনগর গ্রামে তীররক্ষা প্রকল্পের ব্লক ধসে গেছে। ব্লকের পশ্চিমদিকে বালুর টিউবব্যাগ ফেলা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভাঙনের হাত থেকে পদ্মার তীর সংরক্ষণের জন্য ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এতে মোট ৬টি প্যাকেজের আওতায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় পদ্মার তীর সংরক্ষণ ও খনন করা হয়। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল ২০২০ সালে। পরে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। গোদার বাজার এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকা সংস্কার কাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়। ৫টি প্যাকেজে কাজ সম্পন্ন হয়। কোনো কাজই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়নি।
বড়চর বেনীনগর গ্রামের সালাম সরদার (৩৯) বলেন, আমি ৩ বার বাড়ি পরিবর্তন করেছি। এই এলাকায় গত ৫ দিন ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমার বাড়ি হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভাঙন শুরু হওয়ার পর পারের উপরের দিকে বস্তা ফেলা হচ্ছে। আর নিচ থেকে ভেঙে যাচ্ছে।
আক্কাস আলী সরদার (৪২) বলেন, আমার ফসলী ৪ থেকে ৫ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছিলাম। নদী ভাঙনে আগে থেকে উদ্যোগ নিলে আমাদের খুব ভালো হতো।
গৃহবধূ সালেহা বেগম (৩২) বলেন, আগে আমাদের বাড়ি ছিল সিলিমপুরে। সেই বসত জমি এখন পদ্মার মধ্যে। এখানে ১৫ বছর ধরে বসবাস করছি। এই বাড়ি হুমকির মুখে। এবার নদীতে আগের মতো পানি বাড়েনি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী শুকনা থাকলে নিচ থেকে কাজ করে আসলে খুব ভালো হতো। গরীব মানুষগুলো বেঁচে যেতো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল আমীন বলেন, নদীর তীর রক্ষায় একটি বড় প্রকল্প কিছুদিন আগে সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে কাজ বুঝে নেওয়া হয়েছে। পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ সম্প্রতি বেড়েছে। এতে করে ডুবোচর তৈরি হওয়ার পাশাপাশি কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।
Comments