লালমনিরহাটে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে তিস্তার পানি

উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসা অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি বাড়ছে। ঢলের পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
বন্যার আশঙ্কা
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ গ্রামে তিস্তার পানি। ৪ জুলাই ২০২৩। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ বুধবার সকাল ৬টায় পানির লেভেল রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১৮ মিটার। এখানে বিপৎসীমা হলো ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।

উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসা অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি বাড়ছে। ঢলের পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খোলা রাখা হয়েছে।

আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, লালমনিরহাটে ধরলার পানিও বাড়ছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তা ও ধরলার পানি বাড়ছে।

তবে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে।

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট ও আমন বীজতলা।

বন্যার আশঙ্কা
রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় যাতায়াত করছেন খুনিয়াগাছ গ্রামের বাসিন্দারা। ৪ জুলাই ২০২৩। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার কৃষক আবদার হোসেন (৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তায় পানি বাড়লে বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। তিস্তায় পানিতে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় যাতায়াত করছি। আমনের বীজতলা তলিয়ে যাচ্ছে।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বাগডোরা গ্রামের দিনমজুর মোসলেম উদ্দিন (৪৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাড়িতে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। আজ সকাল থেকে ঘরের ভেতর পানি ঢুকছে। তিস্তায় আরেকটু পানি বাড়লে বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে।'

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তিস্তার পানির লেভেল ওঠানামা করেছিল। আজ সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তায় পানি বাড়ছে। তিস্তার চর ও তীরবর্তী কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।'

'আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ধরলাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সতর্কবার্তা আছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'ধরলার পানিও হু হু করে বাড়ছে।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়নে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে ধরলার পানি হু হু করে বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ধরলাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।'

Comments