নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে ১৭ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে

টানা পাঁচ দিনের বর্ষণ ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে সোমবার পর্যন্ত নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সাড়ে ১৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।
নোয়াখালীর হাতিয়ায় ডুবে যাওয়া জমিতে ধানের চারা রোপণ করছেন কৃষি শ্রমিকরা। ছবি: সংগৃহীত

টানা পাঁচ দিনের বর্ষণ ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে সোমবার পর্যন্ত নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সাড়ে ১৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।

এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৩৫০ হেক্টর, কমলনগরে ১০৬০ হেক্টর এবং নোয়াখালীর হাতিয়ায় ১৬ হাজার হেক্টর কৃষি জমি পানির নিচে চলে গেছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর কৃষি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব এলাকার কাঁচা সড়ক ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রামগতি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হযরত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উপজেলার চর রমিজ, চর আলগী, চর আবদুল্লাহ, বড় খেড়ী ও রঘুনাথপুর এলাকায় বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ৩৫০ হেক্টর জমির আমন ধানসহ অন্যান্য ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।

কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, উপজেলার ১ হাজার ৬০ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে আমন বীজতলা ২০০ হেক্টর, রোপা আমন ৩৫০ হেক্টর, আউশ ধান ১০০ হেক্টর, শাকসবজি ১০ হেক্টর সহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রজ্জন দাশ জানান, মেঘনার জোয়ারে ও টানা বর্ষণে উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের একটি রাস্তা ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকে ১৫-২০ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট উঁচু জোয়ারে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৩১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধহীন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলায় ৮১ হাজার ৫০ হেক্টর জমি আমন ধান চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৬০ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল বাসেত সবুজ জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমি আমন চাষের আওতায় আছে। এরমধ্যে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ১৬ হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড হাতিয়া কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী জামিল আহম্মেদ বলেন, টানা বৃষ্টির পানি ও পূর্ণিমার প্রভাবে গত কয়েকদিন অতি মাত্রায় জোয়ার হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি মেঘনা নদীর মাধ্যমে প্রবাহিত হওয়ার কারণে হাতিয়া ও উপকূলবর্তী উপজেলাগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উঁচু জোয়ার হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রামগতির চর আলেকজেন্ডারের বালুরচর ও চর আলগী ইউনিয়নের চর টবগী এলাকায় কাঁচা সড়ক এবং কমলনগর উপজেলা একটি কাঁচা সড়ক ভেঙে গেছে।

Comments