বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপরে মুহুরী নদীর পানি, ২ দিনে ফেনীর ১৭ গ্রাম প্লাবিত

ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের চিথলিয়া অংশের কয়েকটি স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে।
ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া গ্রামে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে রোববার ভাঙনের সৃষ্টি হয়। ছবি: সংগৃহীত

ফেনীতে মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সোমবার একপর্যায়ে এ নদীর পানি বিপৎসীমার প্রায়  ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দুইদিনে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ১৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি এলাকার উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানিপ্রবাহ গত রোববার দুপুর থেকে বাড়তে থাকে।

আজ মঙ্গলবার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় নতুন করে আরও ৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের চিথলিয়া অংশের কয়েকটি স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে।

সোমবার ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বিজয়পুর, কিসমত বিজয়পুর, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, বনিক পাড়া, দক্ষিণ শ্রীপুর এবং পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের অলকা, নোয়াপুর ও ধনিকুন্ডা গ্রাম প্লাবিত হয়।

আজ প্লাবিত হয়েছে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের জগতপুর, বসন্তপুর, আমজাদ হাট ইউনিয়নের মনিপুর এবং পরশুরাম উপজেলার অনন্তপুর গ্রাম।

স্থানীরা জানায়, সোমবার ভোরে ফুলগাজীর বরইয়া ও সকাল ৯টার দিকে দৌলতপুর এলাকায় এবং দুপুর ২টার দিকে পরশুরাম উপজেলার অলকা গ্রাম এলাকায় মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। 

এতে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে এবং পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের ৩টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। তলিয়ে যায় আমন ধান, শাক-সবজি, ভেসে যায় পুকুরের মাছ। 

সোমবার দুপুরে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের ফুলগাজী সদরের বাজারের অংশ প্রায় ১ ফুট পানির নীচে তলিয়ে যায়। তবে আজ মঙ্গলবার ফুলগাজী এলাকায় সড়কের পানি নেমে গেছে।

পরশুরাম এলাকার দায়িত্বে পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানের পাহাড়ি পানি আসা বন্ধ হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।'

ইতোমধ্যে ফেনী-১ আসনের (ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম) সংসদ সদস্য শিরিন আখতার ও ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

জানতে চাইলে পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরশুরাম পৌরসভার অনন্তপুর গ্রামে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের বরাদ্দ থেকে ২ মেট্রিক টন চাল স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে।'

ফেনীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে জানান, আমনের চারা ও বীজতলা, সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি।

Comments