বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর কোনো ভর্তুকি দেবে না সরকার: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি আমদানি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়, ভোক্তার কাছ থেকে সেটাই আদায় করা হবে।
বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। স্টার ফাইল ছবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সরকার আর কোনো ভর্তুকি দেবে না। জ্বালানি আমদানি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়, ভোক্তার কাছ থেকে সেটাই আদায় করা হবে।

আজ রোববার বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের জ্বালানি বিষয়ক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এখন দেশের শিল্পখাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল কোভিডের কারণে সেখান থেকে একটু পিছিয়ে আছি। তবে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক হলে সেটাও ঠিক হয়ে যাবে।'

তিনি বলেন, 'দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যে গ্রামে ছোট ছোট ১০-১২টি ঘর আছে, সেখানেও বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। তারা সারাজীবন বিদ্যুতের বিল দিলেও তো ওই খরচ উঠবে না। সরকার এখানে কোনো লাভের আশা করেনি। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছার কারণে ছোট ছোট বাজারেও এখন ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে, ব্যবসা হয়। সেই ছোট ছোট অর্জন নিয়েই দেশের সামগ্রিক জিডিপির সামগ্রিক এই অগ্রগতি।'

'এখন সরকারের মূল লক্ষ্য সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। আমাদের এখন যথেষ্ট বিনিয়োগকারী আছে। যার মূল কারণ, বিদ্যৎ ও জ্বালানি বিভাগের ওপর বিনিয়োগকারীদের ভরসা আছে,' তিনি বলেন।

গ্যাস অনুসন্ধানে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, সমালোচনাকারীদের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নসরুল হামিদ বলেন, 'এক সময় বলা হতো দেশ গ্যাসের ওপর ভাসছে। সেটা ২০০১ সালের কথা। এর পর থেকে আপনারা গ্যাস ব্যবহার করেননি? দেশের যে এত এত শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেছে, সেগুলোতে গ্যাস ব্যবহার হয়েছে, গ্যাসভিত্তিক অনেকগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হয়েছে, সেগুলোতে গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। তারপরও তো আমাদের শিল্পের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। যার কারণে আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'সমুদ্রে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার। মাঝখানে দুটো কোম্পানি এসেছিল অনুসন্ধান কাজ করতে, কিন্তু দেশে গ্যাসের দাম কম বলে তারা রাজি হয়নি। এখন আন্তর্জাতিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ছে, ফলে নতুন করে একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।'

'স্ট্র্যাটেজিক এপ্রোচ ফর এনার্জি সিকিউরিটি টু এটেইন সাসটেইনেবল গ্রোথ' শীর্ষক সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, জিই সাউথ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপেশ নন্দ ও ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মো. আলমগীর।

বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।

Comments