প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

'সিলেটে এবার পাখির মাংসে ডিবি কর্মকর্তার জন্মদিনের ভোজ' শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অলক কান্তি শর্মা।

প্রায় এক বছর আগে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের লিখিত প্রতিবাদে তিনি জানান, 'গত ২১ অক্টোবর ২০২১ তারিখ শাহপরান থানা এলাকায় ডিবি টিমের টহল ডিউটি তদারকি শেষে বাসায় যাওয়ার সময় স্বপন দাশ নামে পূর্ব পরিচিত একজন ফোন করে হরিপুরে যেতে বলে। তাদের সাথে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও রাতের খাবার খেতে বাধ্য হই। রেস্টুরেন্টে ঝোলানো মেন্যু হতে গরুর মাংস, দেশি মুরগি ও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত কোয়েল পাখির মাংস অর্ডার করা হয়। খাবার মুহূর্তের ছবি সঙ্গীয় স্বপন দাশ ক্যামেরাবন্দি করে।'

'রাতের খাবার শেষে বাসায় ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখি স্বপন দাশ তার ফেসবুক আইডি থেকে খাবারের সময় তোলা ছবি 'বড় ভাই সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসপি অলক শর্মা ভাইয়ের জন্মদিন উপলক্ষে পাখির মাংস দিয়ে রাতের খাওয়া দাওয়া' শিরোনাম দিয়ে পোস্ট করেছে। বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে স্বপন দাশকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, সে জানায় মজা করে ফেসবুকে এমন পোস্ট দিয়েছে এবং কোয়েল ও দেশি মুরগির মাংসকে পাখির মাংস হিসাবে ক্যাপশন দিয়েছে।

"প্রকৃতপক্ষে আমার জন্ম তারিখ ডিসেম্বর মাসে"। সে তার কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ও তার পোস্টটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেয় এবং প্রতিবেদকের বক্তব্যেও আমি এই কথাটি উল্লেখ করেছি।'

'মূলত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে আমিসহ আমার সঙ্গীয়রা অবগত আছি। এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এবং একজন সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে আমরা দেশের সব আইন মেনে চলি। তাই এ ধরনের আইনবিরোধী কাজ থেকে আমরা বিরত থাকি এবং মানুষকে উক্ত কার্য সম্পাদন হতে নিরুৎসাহিত করে থাকি। উপরোক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।'

প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রকাশিত সংবাদে স্বপন দাশের দেওয়া ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিমের দেওয়া ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে যেখানে তিনি সমালোচনা করেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিষয়ে।

প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অলক কান্তি শর্মার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে আবদুল করিম কিমের দেয়া ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে তার দেয়া বক্তব্যটি দ্য ডেইলি স্টার প্রতিবেদনে প্রকাশ করে যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন কোয়েল পাখি ও দেশি মুরগির মাংস খাওয়ার বিষয়ে। 

হরিপুর বাজারের যে রেস্টুরেন্টটিতে তারা রাতের খাবার খেয়েছিলেন, সেই তারু মিয়া রেস্টুরেন্টে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায় এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এসময় রেস্টুরেন্টটির স্বত্ত্বাধিকারী ওয়াহেদ মিয়া বন্য পাখি বিক্রি করবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। এছাড়াও বন অধিদপ্তর রেস্টুরেন্টটি থেকে বালিহাঁস, ঘুঘু, কালিম, ডাহুক, কোড়া, শামুকখোল ও বক পাখির মাংস জব্দ করে যার ফরেনসিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টার একই এলাকায় ও একই রেস্টুরেন্টে অনুসন্ধান চালায়। এ বিষয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ডেইলি স্টার বাংলায় 'অবাধে চলছে হরিপুরের বন্যপাখির মাংসের রেস্টুরেন্ট' প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অনুসন্ধানকালে তারু মিয়া রেস্টুরেন্ট সংশ্লিষ্টরা জানান তারা বন্য ও পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রি করেন এবং পাতিহাঁস, মুরগি ও কোয়েলের রান্না মাংস বিক্রি করেন না। যা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

17h ago