‘শিয়াল ধরতে ছাগলের মাংসে বিষ’, মারা গেল ১৩ শকুন ও ৩ কুকুর

প্রতীকি ছবি: সংগৃহিত

মৌলভীবাজারে বিলুপ্তপ্রায় ১৩টি শকুন ও ৩টি বেওয়ারিশ কুকুরের মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ।

ধারণা করা হচ্ছে, সদর উপজেলার বড়কাপন এলাকার একটি মাঠে স্থানীয়রা ছাগলের মাংসে বিষ মিশিয়ে রেখেছিলেন। সেই মাংস খেয়ে শকুন ও কুকুরগুলো মারা গেছে।

আজ বুধবার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে সেটা এখনো জানা যায়নি। তবে কুকুরের মৃত্যু দেখে মনে হয়েছে খাবারে বিষ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আরও কুকুর মারা গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রথমে ১০টি মৃত শকুন মৌলভীবাজার লাইভস্কট অফিসে পাঠিয়েছিলাম মৃত্যুর কারণ জানার জন্য। তবে তারা কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তাই অধিকতর তদন্তের জন্য আমরা মৃত শকুনগুলোকে সিলেটে পাঠিয়েছি।'

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, 'যে মৃত শকুনগুলো আনা হয়েছিল সেগুলোর শরীরের বেশিরভাগ অংশ পচে গিয়েছিল, গায়ে পোকাও ধরেছিল। এই মৃত শকুনগুলো দেখে মনে হচ্ছে এগুলো মারা গেছে কমপক্ষে ১০ দিন আগে।'

এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে এলাকায় শিয়ালের উৎপাত বেড়ে গিয়েছিল। অনেকগুলো ছাগল শিয়াল খেয়ে ফেলেছে। এ কারণে বড়কাপন গ্রামের বুড়িকোনা ক্ষেতের জমিতে মৃত ছাগলের ওপর বিষ প্রয়োগ করে শিয়াল মারার জন‍্য ৫ থেকে ৬ দিন আগে টোপ দেওয়া হয়েছিল।

ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, 'আমি কয়েকদিন আগে এখানে একটি মৃত ছাগল দেখেছিলাম। এর কয়েকদিন পর দেখতে পাই অনেকগুলো শকুন মরে পড়ে আছে।'

এ বিষয়ে শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিয়াল মারার জন‍্য বিষ প্রয়োগে এ ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা এমন নিষ্ঠুর কাজ করেছে তাদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তবে আমরা ঘটনা তদন্ত করছি।'

'ঘটনাস্থল থেকে আমরা ১০টি মৃত শকুন উদ্ধার করে পরীক্ষা নিরীক্ষার সিলেট ল‍্যাবে পাঠিয়েছি। আজ এসে আরও ৩টি মৃত শকুন পেয়েছি। আশপাশে আরও মৃত শিয়াল, কুকুর ও বিড়াল পড়ে আছে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এটা নিশ্চিত হতে পেরেছি যে এখানে একটি ছাগল মারা গিয়েছিল। তারপর সেটাতে বিষ দেওয়া হয়েছে, যার মাংস খেয়ে শকুন ও অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।'

'বিষের কারণে শকুনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে আরও নিশ্চিত হতে পারবো যখন সিলেট খেকে রিপোর্টগুলো আসবে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

8h ago