‘খননের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করে নদকে খালে রূপান্তর করা হচ্ছে’

মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে ব্রহ্মপুত্রপাড়ে মিডিয়া ক্যাম্পেইন করেছে ‘জনউদ্যোগ, ময়মনসিংহ’ নামের একটি পরিবেশবাদী সিটিজেন ফোরাম।
মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে ব্রহ্মপুত্রপাড়ে মিডিয়া ক্যাম্পেইন করেছে ‘জনউদ্যোগ, ময়মনসিংহ’ নামের একটি পরিবেশবাদী সিটিজেন ফোরাম। ছবি: সংগৃহীত

মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে ব্রহ্মপুত্রপাড়ে মিডিয়া ক্যাম্পেইন করেছে 'জনউদ্যোগ, ময়মনসিংহ' নামের একটি পরিবেশবাদী সিটিজেন ফোরাম।

আজ শনিবার সকালে এই উদ্যোগের নেতারা নদের খননকৃত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।

জনউদ্যোগের আহবায়ক অ্যাড. নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার খনন প্রকল্প চালাচ্ছে। দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে খননকাজ শুরু হয়। গত বছরের মে মাসে এক সভায় ব্রহ্মপুত্র নদ খননের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খন্দকার রাকিবুল ইসলাম বলেছিলেন, চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে নদে বার্জ, লঞ্চ-স্টিমার চলবে। যেখানে শুষ্ক মৌসুমেও যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও ১০ ফুট গভীর থাকবে এমনটি কথা ছিল।'

'কিন্তু আমরা দেখছি ঠিক উল্টো। এখন অনেক স্থানে হেঁটে পার হওয়া যায়,' বলেন তিনি।

সুষ্ঠু খননের মাধ্যমে নদের যৌবন ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য উন্নয়নে ড্রেজিং প্রকল্পটি আগামী ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পের প্রথম ২ বছর নদের ড্রেজিং এবং পরবর্তী ৩ বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার কথা ছিল।'

জনউদ্যোগের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, 'খননের নামে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে এবং নদকে খালে রুপান্তর করা হচ্ছে।'

নদের সীমানা চিহ্নিত না করার ফলে প্রতিনিয়ত অবৈধ দখল বেড়েই চলছে এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফলে জেলার প্রায় সকল নদ-নদী, জলাশয় দখল ও ভরাট হয়ে প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশের বৈচিত্য হারিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।

জনউদ্যোগ যুগ্ম-আহবায়ক অ্যাড. আবদুল মোত্তালেব লাল, উপদেষ্টা বাকৃবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যক্ষ ড. শাহাব উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাড. আশরাফুল ইসলাম জর্জ, সদস্য অ্যাড. আবুল কাশেম, খন্দকার সুলতান আহমেদ, অ্যাড. মতিউর রহমান ফয়সাল, নূর নাহার বেগম দীপা, জিয়াউর রহমান জিয়া, অ্যাড. শহীদুল ইসলাম ও জনউদ্যোগ, সদস্য সচিব কাজী শাখাওয়াত হোসেনসহ আরও অনেকে এই ক্যাম্পেইনে অংশ নেন।

গতকাল শুত্রবার মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় হাটুঁ পানিতে দাঁড়িয়ে 'মৃতের চিৎকার' ব্যানারে এক অভিনব প্রতিবাদ করেছেন একদল তরুণ।

কবি শামীম আশরাফ-এর আয়োজনে এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মানবাধিকার ও রাজনৈতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি প্রকাশ করে হাঁটু পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানান। তারা মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

Comments