অবাধে বালু উত্তোলন, হুমকিতে ব্রহ্মপুত্র সেতু ও শহররক্ষা বাঁধ

ব্রহ্মপুত্রের তীর থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। ছবি: শহিদুল ইসলাম/স্টার

শেরপুর ও জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

আইনকে অমান্য করে ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে লাগামহীন বালু উত্তোলনের ফলে সেতু, হাইওয়ে সড়ক, ফসলি জমি ও বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়েছে। এমনকি বর্ষা মৌসুমে সেতুটি ধসে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শেরপুর সদর উপজেলার পক্কিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকবর আলী ও তার ভাই মনো মুন্সি বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া জামালপুর অংশে শহিদ মিয়া, চান্দু গেদা ও জয়রামপুর আওয়ামী লীগের নেতা মমিন, বজলু ও নুরু মিয়াসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।

বালু উত্তোলন ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী, কালভার্ট, বাঁধ, ব্যারেজ, সেতু, বাঁধ, মহাসড়ক, রেললাইন, আবাসিক এলাকা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।

নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে করতে জামালপুর ও শেরপুর জেলা প্রশাসককে জানানো হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

শেরপুর জেলার পক্কিমারি গ্রামের নরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটিই ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একমাত্র সেতু যা দুই জেলাকে সংযুক্ত করেছে। সেতু সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ মাটি উত্তোলনের ফলে এটি ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে আছে।'

জামালপুর পৌরসভার বাসিন্দা মাহবুব বলেন, 'সেতুর প্রায় ৩০০-৪০০ ফুট দূর থেকে প্রকাশ্যেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকবর আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুধু আমরাই মাটি নিচ্ছি না, এখানে জামালপুর ও শেরপুরের আরও ১০-১২ জনের বেশি লোক নদী থেকে মাটি কাটছে।'

আকবর আলীর ছোট ভাই মনো মুন্সি বলেন, 'নদ থেকে বালু উত্তোলনের জন্য আমরা প্রশাসনকে টাকা দেই। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।'

জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (জামালপুর) পঙ্কজ ভৌমিক বলেন, 'আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু সেতুটি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।'

এদিকে বালু উত্তোলন বন্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন

শেরপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান।

তিনি বলেন, 'সেতু দুটি জেলার ওপর থাকায় বিষয়টি একটু জটিল। তবে এই নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে আমরা শিগগিরই যৌথ অভিযান শুরু করব।'

জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, 'অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে শেরপুর জেলা প্রশাসন জামালপুর জেলা প্রশাসনের সহায়তা চাইলে তা করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
NBR Protests

NBR officials again announce pen-down strike

This time, they will observe the strike for three hours beginning at 9 am on June 23

2h ago