বায়ুদূষণ রোধে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-পাকিস্তানের যৌথ পরিকল্পনা

২০৩০ সালের মধ্যে বাতাসে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ২ দশমিক ৫ এর বার্ষিক গড় প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান।
স্টার ফাইল ছবি

২০৩০ সালের মধ্যে বাতাসে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ২ দশমিক ৫ এর বার্ষিক গড় প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পিএম ২ দশমিক ৫ এর মাত্রা কমিয়ে আনার অর্থ বাতাসের গুণগত মান ভালো, তা স্বাস্থ্যসম্মত এবং এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মান।

যেসব দেশে বায়ুদূষণ বেশি, তাদের জন্য পিএম ২ দশমিক ৫ এর বার্ষিক গড় প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ডব্লিউএইচও।

ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) ও বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে ৪ দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশে বাতাসের গুণমান উন্নত করার জন্য কাঠমান্ডু রোডম্যাপ তৈরি করতে গত ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর নেপালে বৈঠক করেন। ২ দিনের আলোচনা শেষে ১৫ ডিসেম্বর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।

পিএম ২ দশমিক ৫ মূলত ধূলিকণা ও ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটারের ছোট পদার্থকে বোঝায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওই কণাগুলো ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে থাকে।

বর্তমানে বাংলাদেশে পিএম ২ দশমিক ৫ এর বার্ষিক গড় প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ মাইক্রোগ্রাম (এমসিজি)।

যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ এমসিজি বা তার বেশি হয়, তাহলে বাতাসের মানকে অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। যাদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে, এই পরিস্থিতি তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

নেপালের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আমিরুল কায়সার। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৪ দেশের মধ্যে এটিই প্রথম আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগ। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত এলাকায় বায়ুদূষণ কমাতে এটি একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।'

'৪ দেশই ২০৩০ সালের মধ্যে পিএম ২ দশমিক ৫ এর মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ এমসিজিতে নামিয়ে আনতে জাতীয় ও আঞ্চলিক উদ্যোগ নিতে সম্মত হয়েছে। দেশগুলো নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জামগুলো শেয়ার করতেও একমত হয়েছে। সব মিলিয়ে এই উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী', বলেন তিনি।

গত বুধবার বিশ্বব্যাংক 'স্ট্রাইভিং ফর ক্লিন এয়ার: এয়ার পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাতাসের প্রধান অভিমুখের কারণে বাংলাদেশের ৩ বৃহত্তর শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বায়ুদূষণের ৩০ শতাংশ ভারতে উৎপন্ন হয়।

প্রতিবেদনে রাজধানীর বায়ুদূষণের বিষয়ে বলা হয়েছে, এখানকার মোট বায়ুদূষণের ১০ শতাংশের জন্য ঢাকা দায়ী। আর ২৫ শতাংশ অন্যান্য দেশে উৎপন্ন হয়।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন Curbing deadly air pollution: 4 nations draw up roadmap

Comments