সুস্পষ্ট লঘুচাপে জলোচ্ছ্বাস-অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা, ৩ নম্বর সংকেত

সংকেত.jpg
স্টার ফাইল ছবি | ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস ও অতিভারী বর্ষণ হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী, উড়িষ্যা উপকূল ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে এগিয়ে ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে ভারতের ছত্রিশগড় ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগুতে পারে।

এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। যে কারণে সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

অধিদপ্তর ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়া বয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি হয়তো আজই আরও দুর্বল হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি মাসের শেষ ভাগে আরও একটি বর্ষাকালীন লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২ দিন মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় এবং সারা দেশে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা বজ্রঝড় হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগস্টেও সারা দেশ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

গত মাসের আবহাওয়া পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুলাই মাসে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। তবে সিলেট বিভাগের বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ১, ১৯ ও ২০, ২৩ থেকে ২৫ এবং ৩০ ও ৩১ জুলাই দেশের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়।

সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়। ১৬ জুলাই সিলেটে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। মৌসুমি বায়ু দুর্বল থাকায় পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ঘটে। ফলে ২২ থেকে ২৪ ও ৩০ থেকে ৩১ জুলাই সারা দেশে বিচ্ছিন্নভাবে প্রবল বজ্রপাত ও অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়।

বায়ুমণ্ডলে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি, প্রখর সূর্যকিরণ এবং মৌসুমি বায়ু দুর্বল থাকায় ৫, ৭ থেকে ২১, ২৩ এবং ২৯ জুলাই রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, সিলেট বিভাগ এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। ১৩ জুলাই রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১৪ জুলাই সৈয়দপুরে ৩৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Chhatra Dal rally begins at Shahbagh

BNP’s Acting Chairman Tarique Rahman joined the rally virtually as the chief guest

2h ago