বৃষ্টি ঝরলেও থাকবে গরম, মাস শেষে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার সম্ভাবনা

চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বিদায় নেবে। সামগ্রিকভাবে এ মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও দিন-রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঈদের দিনসহ সপ্তাহজুড়ে সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা
স্টার ফাইল ফটো

চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বিদায় নেবে। সামগ্রিকভাবে এ মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও দিন-রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। মাসের শেষে আরও একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞদের মত, ওই লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে।

পূর্বাভাস বলছে, চলতি মাসে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় ও সারা দেশে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা বজ্রঝড় হতে পারে। এ ছাড়া, রয়েছে বন্যার সম্ভাবনা।

অক্টোবরে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলো স্বাভাবিক প্রবাহ থাকতে পারে। তবে ভারি বৃষ্টির কারণে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জায়গায় স্বল্প মেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আজ বুধবার আবহাওয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও অন্ধ্র উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘ সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও দেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ওপর দিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়া বয়ে যেতে পারে। সেসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও অন্ধ্র উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ভারতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আজকেই এটি স্থলেভাগে উঠে যাবে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় কিছুটা প্রভাব পড়লেও ঢাকায় তেমন প্রভাব বোঝা যাবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'আগামী ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। মাসের শেষভাগে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ওই সময় ভারি বৃষ্টির সম্ভবনা আছে।'

তার মতে, 'যদি ভারি বর্ষণ হয় তাহলে স্বল্প মেয়াদি বন্যা হতে পারে।'

গত মাসের আবহাওয়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম এবং সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর এটি একই এলাকায় অবস্থান করছিল এবং সেখানে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়।

এরপর এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ঘণীভূত হয়ে উপকূলীয় উড়িষ্যা ও এর পাশে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় নিম্নচাপে রূপ নেয়।

এরপর এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে প্রথমে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ এলাকায় অবস্থান নেয় এবং পর্যায়ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর পাশের এলাকায় লঘুচাপের সৃষ্টি হয়।

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ১ থেকে ৫ ও ১০ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর দেশের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। কিছু কিছু জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ এবং অতিভারি বর্ষণও হয়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়ায় দৈনিক সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ১৫০ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়।

বায়ুমণ্ডলে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি, প্রখর সূর্যকিরণ এবং মৌসুমি বায়ু দুর্বল থাকায় গত ২ সেপ্টেম্বর এবং ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। গত ৯ সেপ্টেম্বর সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

গত মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Trade at centre stage between Dhaka, Doha

Looking to diversify trade and investments in a changed geopolitical atmosphere, Qatar and Bangladesh yesterday signed 10 deals, including agreements on cooperation on ports, and overseas employment and welfare.

5h ago