যে কারণে কমছে না গরম, দীর্ঘ হচ্ছে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা

এদিন সকাল ৬টায় ঢাকার বাতাসে আদ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অনুভূত হচ্ছে 'তীব্র গরম'।

আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কেবল রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তাপমাত্রা থাকছে ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

এছাড়া সারা দেশে তাপপ্রবাহ মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের; অর্থাৎ ৩৬ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা রয়েছে।

ছবি: আবহাওয়া অধিদপ্তরের সৌজন্যে

এদিন সকাল ৬টায় ঢাকার বাতাসে আদ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বান্দরবানে ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পূর্বাভাস বলছে, এই পরিস্থিতি আরও অন্তত ৫ থেকে ৬ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে বাড়তে পারে অস্বস্তি।

বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় প্রতিদিনই দেশের দু'এক জায়গায় বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ঝড় হচ্ছে। আজ সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে সর্বোচ্চ ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

এছাড়া বান্দরবানে ১২ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ৩ ও তেঁতুলিয়ায় ২ মিলিমিটার এবং কক্সবাজারে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।

আজও চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই কারণে এসব এলাকার নৌ-বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

তবু অপরিবর্তিত রয়েছে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই সময়ে সূর্য কিরণ সরাসরি আমাদের ভূ-খণ্ডের ওপর পড়ে। তাই পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে তাপপ্রবাহ শুরু হয়।'

জুন মাসে ৪৫৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। আব্দুর রহমান বলেন, 'জুন মাসের ৬ দিন চলে গেছে, এখনো মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) আসেনি। মৌসুমি বায়ু বৃষ্টি নিয়ে আসে আর বৃষ্টি শুরু হলে তাপমাত্রা কমে যায়।'

তিনি বলেন, 'বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির পরিস্থিতি হয়েছে। এছাড়া আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ রয়েছে। ফলে এই ২ পথেই মৌসুমি বায়ু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।'

রাডার ইমেজ

'আরব সাগরের নিম্নচাপটি ঘূর্ণীঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তবে সেটি আমাদের দিকে আসবে না। বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ ও আরব সাগরের নিম্নচাপ গুরুত্বহীন হয়ে না পড়া পর্যন্ত মৌসুমি বায়ু আসার সম্ভাবনা নেই,' বলেন তিনি।

আব্দুর রহমান আরও বলেন, 'ধারণা করা হচ্ছে, আরও অন্তত ৫ থেকে ৬ দিন অপেক্ষা করতে হবে। তারপর বৃষ্টি শুরু হবে এবং তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আসবে।'

Comments