২ সপ্তাহে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে অন্তত ২৫ শতাংশ

মাত্র ২ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে আরও বেশি সমস্যায় পড়ছেন।

গত ২ সপ্তাহে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২ সপ্তাহ আগে একটি ডিমের দাম ছিল সাড়ে ৯ টাকা এবং ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতো ১৬০ টাকায়। গতকাল শনিবার প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১২ টাকায় এবং ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০ টাকা কেজি।

বিশেষজ্ঞ ও ছোট খামারিরা অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য পোল্ট্রি শিল্পের বড় খামারি ও মধ্যস্থতাকারীদের দায়ী করছেন।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) তথ্য অনুযায়ী, উৎপাদন পর্যায়ে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৪৮ টাকা।

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, 'খুচরা পর্যায়ে এর দাম সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা কেজি হতে পারে।'

তিনি বলেন, 'খামার পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১১ টাকা ১১ পয়সা। এর খুচরা মূল্য ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত না। পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধির কারণে ডিম উৎপাদনের খরচ বেড়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'রমজান মাসকে সামনে রেখে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো রোজাকে সামনে রেখে এক একটি মুরগির দাম রাখছে ৫৭ টাকা, যেখানে যৌক্তিক দাম হতে পারে ৪০ টাকা।'

সুমন আরও বলেন, 'প্রান্তিক খামারিরা সম্পূর্ণভাবে পোল্ট্রি ফিডের জন্য এই করপোরেশনগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এই করপোরেশনগুলো বাজারের মাত্র ১০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু, তারাই মুরগির বাচ্চা ও খাবার সরবরাহ কমিয়ে বা বাড়িয়ে পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।'

সুমন বলেন, 'বড় করপোরেশনগুলো যদি এই মুহূর্তে ছোট খামারিদের কাছে বেশি দামে বাচ্চা ও খাবার বিক্রি করতে থাকে, তাহলে রোজা ও ঈদে ভোক্তাদের শেষ পর্যন্ত বেশি দাম দিয়ে ডিম ও মুরগি কিনতে হবে।'

যোগাযোগ করা হলে এভন পোল্ট্রির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হাসান বলেন, 'ব্রিডাররা শীতকালে ডিম ফোটানো ২০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। সম্প্রতি উৎপাদন বেড়েছে।'

তিনি বলেন, 'এটা চাহিদা ও যোগানের সমস্যা। আগামী মাসের মধ্যে বাজার স্থিতিশীল হবে।'

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল হক বেগ বলেন, 'অস্বাভাবিক মূল্যের জন্য বাজারে পর্যবেক্ষণের শিথিলতা দায়ী।'

তিনি বলেন, 'একটি মুরগির বাচ্চার দাম ৪০ টাকার বেশি হওয়া উচিত না। কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই। ডিলাররা প্রায়ই খাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, সেখানেও কোনো নজরদারি নেই।'

প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, 'এই শিল্প দেখার জন্য সেখানে একটি পৃথক সরকারি সংস্থা কাজ করে। বাংলাদেশেও এমন একটি সংস্থা তৈরি করতে হবে, যারা পোল্ট্রি শিল্পের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে কাজ করবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

19h ago