বেগুনে আগুন, লেবুতে ঝাঁঝ

বাজারে ৫০ টাকার নিচে শুধু পেঁপে ছাড়া আর কোনো সবজি নেই। ছবি: স্টার

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেগুনের দাম শুনেই ভ্যাবাচেকা খেয়ে যেতে হলো। প্রতি কেজি বেগুনের দাম ১০০ টাকা।

১০ দিন আগেও যে বেগুনের দাম ছিল ৫০-৬০ টাকা, সেটা ১০০ টাকা হলো কীভাবে? এই কয়েকদিনে কী এমন হলো যে বেগুণের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেল? বিক্রেতা উত্তর দিলেন, 'জানেন না, বৃহস্পতিবার থেকে রোজা শুরু। রমজান আসলে বেগুনের দাম বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।'

তাই বলে এত বেশি? বিক্রেতা উত্তর দিলেন, 'সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি, তাই দামও বেশি। নিলে নেন, না নিলে অন্য দোকানে দেখেন। এত কথা বলার সময় নেই।'

ফাইল ছবি: স্টার

আজ বুধবার কারওয়ান বাজারে হয় এই অভিজ্ঞতা। বাজারে ৫০ টাকার নিচে শুধু পেঁপে ছাড়া আর কোনো সবজি নেই।

কারওয়ান বাজারে আজ প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৮০-১০০ টাকা, সজনে ১২০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৭০-৮০ টাকা, ক্যাপসিকাম ১০০ টাকা। আকার ভেদে প্রতিটি লাউয়ের দাম ৫০-৭০ টাকা।

এ ছাড়া, প্রতি কেজি আদার দাম ১২০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা।

আকার ভেদে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৭০ টাকা দরে।

লেবুর এত বেশি দামের কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা রহমান আলী বলেন, 'সারা দিন রোজা রেখে ইফতারে সবাই লেবুর শরবত খায়। তাই লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। এ কারণেই রমজান আসলেই লেবুর দাম কিছুটা বেড়ে যায়।'

বাজারে আজ প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। এ ছাড়া, চিনি ১১০ টাকা, মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ৭৪ টাকা, অ্যাংকরের বেসন ৭৫ টাকা, বুটের বেসন ১০০ টাকা এবং মুড়ি ৮০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। ছবি: স্টার

আমিন জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. বাবলু মিয়া বলেন, 'রমজানের কোনো পণ্যের দাম তেমন বাড়েনি। কিন্তু এসব পণ্যের ক্রেতা অনেক কম। মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই কিনছে কম।'

আজ মাছ ও মাংসের বাজারেও বিক্রি কম। বিক্রেতারা বলছেন, গত রমজানের তুলনায় বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে।

কারওয়ান বাজারে আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় এবং ছাগলের মাংস ৯০০ টাকায়।

প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ ২০০-২২০ টাকা, কই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিংড়ি মাছ আকার ভেদে ৬০০ থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ মাছের দাম আকার ভেদে ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।

মাছ বিক্রেতা মো. রোকন বলেন, 'মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাছের চাহিদা বেড়েছে, সঙ্গে দামও বেড়েছে। তবে ক্রেতারা এখন অনেক বেশি দামাদামি কিনে মাছ কিনছেন।'

তরমুজের কেজি ৪০ টাকা। ছবি: স্টার

মাংস বিক্রেতা রনি মিয়া বলেন, 'মানুষের পকেটে টাকা নেই। রমজান উপলক্ষে যেমন বিক্রির আশা করেছিলাম তার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম হয়েছে। গতবার রমজানের আগে যেমন বিক্রি করেছিলাম এবার তেমন হচ্ছে না।'

মান ভেদে প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে। এ ছাড়া, আপেল ২৮০-৩০০ টাকা, মাল্টা ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে ১৮০ টাকায়, তরমুজ ৪০ টাকায় এবং বেল আকার ভেদে প্রতি পিস ৬০ থেকে ৯০ টাকায়।

খেজুর বিক্রেতা রহমান আলী বলেন, 'খেজুর দাম গত কয়েক দিনে বাড়েনি। তারপরও চাহিদা কম। খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না।'

Comments

The Daily Star  | English
enforced disappearance in Bangladesh

Enforced disappearance: Anti-terror law abused most to frame victims

The fallen Sheikh Hasina government abused the Anti-Terrorism Act, 2009 the most to prosecute victims of enforced disappearance, found the commission investigating enforced disappearances.

8h ago