দিনাজপুর: ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ল ১০০ টাকা

অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছে ভারত।
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় দিনাজপুরে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দিনাজপুর শহরের বাহাদুরবাজার থেকে আজ শনিবার তোলা ছবি। ছবি: স্টার

গতকাল শুক্রবার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পর বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। এক দিনের ব্যবধানে দিনাজপুরে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা।

ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা আসে কাল।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে একথা জানানো হয়।

গতকাল শুক্রবার এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দিনাজপুরের বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রির ধুম পরে যায়। গভীর রাত পর্যন্তু বাজারগুলোতে চলে পেঁয়াজের বেচাকেনা।

আজ শনিবার দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার, গুদড়িবাজার ও রেলবাজারহাট, হাকিমপুর উপজেলার হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে মানুষের ভিড় দেখা যায়।

গতকাল শুক্রবার বাজার গুলোতে যে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি কেজি, তা আজ শনিবার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা প্রতি কেজি।

খুচরা বাজারে এই দাম আরও বেশি।

দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারের পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মাজেদুর রহমান জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পরে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি বেড়ে যায় গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই। তারা দেশের বিভিন্ন পেয়াজের আড়ৎ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।

কিন্তু আড়তে দাম বেশি হওয়ায় তারাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি জানান গতকাল শুক্রবার বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু আজ সেই একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। খুচরা বাজারে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাহাদুরবাজারের আরেক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন জানান দেশীয় পেঁয়াজ বাজারে না ওঠা ও ভারতীয় পেঁয়াজ আমাদানি শুরু না হওয়া পর্যন্ত আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম কমার সম্ভাবনা কম।

সাধারণত ফেব্রয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে দেশীয় পেঁয়াজ বাজারে আসে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শাহিনুর রেজা শাহিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভারত সরকার হঠাৎ করে গতকাল শুক্রবার একটি চিঠিতে জানিয়েছেন যে, ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আর রপ্তানি করবে না। এমন হুট করে সিদ্ধান্তে দেশের পেঁয়াজের বাজার অস্থির হবে। আমরা চাই দুই দেশের সরকার ভোক্তাদের কথা চিন্তা করে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করবে।

তিনি জানান, ভারত সরকার পেঁয়াজের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হওয়ার ৩ সপ্তাহ আগে এই ঘোষণা দিয়েছে।

এর আগে রপ্তানি কমাতে ও চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাজারে সরবরাহ বাড়াতে গত ২৮ অক্টোবর পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রতি টন ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে ভারত।

রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার মূল্য তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের শুরুতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার নিচে। কিন্তু খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১৩৫ টাকা।

চলতি বছরের আগস্টে প্রতিবেশী দেশটি তাদের বাজারে ক্রমর্বধমান দাম নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।

Comments