'ডায়াবেটিক ধান' কী

ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত রক্তের গ্লুকোজ কমাতে ভাতের বদলে রুটি খেতে বলেন চিকিৎসকরা। এ বিষয়টি মেনে চলা অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের জন্য দারুণ একটি সমাধান হতে পারে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের (জিআই) ধান।
ছবি: সংগৃহীত

ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত রক্তের গ্লুকোজ কমাতে ভাতের বদলে রুটি খেতে বলেন চিকিৎসকরা। এ বিষয়টি মেনে চলা অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের জন্য দারুণ একটি সমাধান হতে পারে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের (জিআই) ধান।

বোরো মৌসুমে কম জিআই সমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান ১০৫ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের অনুমোদন পাওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এ কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) এবং জেনেটিক রিসোর্স ও বীজ বিভাগের প্রধান মো. আলমগীর হোসেন।

ডায়াবেটিস ছাড়াও স্থূলতা এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগে ভুগছেন এমন শ্রমজীবী ​​ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর জন্যও উপকারী এ চাল।

বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪২২ মিলিয়ন মানুষের ডায়াবেটিস আছে। তাদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর ১.৫ মিলিয়ন মৃত্যুর জন্য সরাসরি ডায়াবেটিস দায়ী।

ক্রমবর্ধমান এসব স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে বিশ্বজুড়ে কম জিআইযুক্ত চালের চাহিদা তৈরি হচ্ছে।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কোন খাবারগুলো ভালো তা খুঁজে বের করা সংক্রান্ত গবেষণায় ১৯৮০ সালে ড. ডেভিড জে জেনকিন্স এবং তার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মীরা গ্লাইসেমিক সূচক তৈরি করেন।

জিআই ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কেলে খাবারের র‍্যাঙ্ক তৈরি করে। স্কোরগুলো রক্তের চিনির মাত্রায় খাবারের প্রভাব নির্দেশ করে। গ্লাইসেমিক সূচক কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারকে ৩টি সাধারণ ভাগে বিভক্ত করে। এগুলো হচ্ছে-উচ্চ (৭০ ও তার বেশি), মাঝারি (৫৬ থেকে ৬৯) এবং নিম্ন (৫৫ ও এর নিচে)।

ব্রি ধান ১০৫ এর জিআই স্কোর ৫৫।

বর্তমানে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয়। প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে এগুলো চাষ করা হয়। ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ এর জিআই স্কোর যথাক্রমে ৭০ দশমিক ৯৬ ও ৬২ দশমিক ৩৬।

বিআরআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা জানান, 'প্রতি কেজি ধানের গড় উৎপাদন খরচ ২৭ টাকা ১০ পয়সা। একই টাকা খরচ করে কৃষকরা ব্রি ধান ১০৫ চাষ করতে পারবেন।'

বিআরআরআই উদ্ভাবিত এই চাল আঠালো নয় এবং এর গুণমান আরেকটি জিআই ভেরিয়েন্ট বিআর ১৬ থেকে ভাল।

ব্রি ধান ১০৫ উৎপাদনশীলতা এবং জীবনচক্রের দিক থেকেও বিআর ১৬কে ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে বালাম ধানের উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৬ টন, সেখানে ব্রি ধান ১০৫ এর উৎপাদন ৭ দশমিক ৬ টন।

এ ছাড়া, বালাম ধান উৎপাদনে ১৫৫ থেকে ১৬০ দিন লাগলেও ব্রি ধান ১০৫ উৎপাদনে সময় লাগে ১৪৮ দিন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago