ঢাকা মেডিকেলে বহির্বিভাগ বন্ধ, জরুরি বিভাগে রোগীর ভিড়

চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদের দাবি অনুযায়ী সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে ঢামেক হাসপাতালে। ছবি: স্টার

'শর্ত সাপেক্ষে' ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) জরুরি সেবা চালু করেছেন চিকিৎসকরা। তবে হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগ ও রুটিন সেবা চালু হয়নি। এতে জরুরি বিভাগে বেড়েছে রোগীর চাপ।

আজ সোমবার সকালে ঢামেকে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢামেকের বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে তালা ঝুলছে। কাউন্টারের সামনে অপেক্ষমাণ ১০-১২ জন রোগী ও তাদের স্বজন, যারা ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে এসেছেন। তাদের অনেকেই চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতি ও আন্দোলনের খবর জানতেন না।

বহির্বিভাগে সেবা না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে ভিড় জমান রোগীরা। ছবি: স্টার

বহির্বিভাগ থেকে সেবা না পেয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কাউকে আবার হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়।

তেমনই একজন হাজারীবাগের বাসিন্দা জব্বার আলী। তিনি তার মেয়ে শাহিদাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তার মেয়ের চর্মরোগের জটিলতা আছে।

জব্বার বলেন, 'গত দুদিন ধরে আসছি ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু, কোনো চিকিৎসককে পাইনি। এখানকার একজন নার্স জানালেন, চিকিৎসকরা আন্দোলন করছে বলে বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ। অন্য কোনোদিন আসতে হবে।'

হাজারীবাগের আরেক বাসিন্দা রোকেয়া বেগমের চর্মরোগজনিত জটিলতা আছে। ঢামেকে এসে চিকিৎসক দেখাতে না পেরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রোকেয়া বলেন, 'চিকিৎসকদের আন্দোলনের খবর জানতাম না। জানলে টাকা খরচ করে হাসপাতালে আসতাম না। এখন কী করব? হাসপাতালে যখন এসেছি, ডাক্তার দেখিয়েই যাব।'

এরপর তিনি জরুরি বিভাগের দিকে চলে যান।

বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ থাকায় রোকেয়া বেগমের মতো অনেকেই জরুরি বিভাগে এসে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ঢামেক হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের একাংশ। ছবি: স্টার

হাসপাতালে রুটিন সেবা বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগ থেকেও রোগী ফিরে যেতে দেখা যায়। তেমনই একজন হ্যাপি আক্তার। তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। ঢামেকে তার পিত্তথলির অস্ত্রোপচার হয়েছিল এক সপ্তাহ আগে। সেই অস্ত্রোপচারের সেলাই কাটতে তিনি আজ ঢামেকে এসেছেন।

কিন্তু, একবার বহির্বিভাগ, আরেকবার জরুরি বিভাগ থেকে তাকে ফেরত যেতে হয়।

দ্য ডেইলি স্টারকে হ্যাপি বলেন, 'আমি তিনবার বহির্বিভাগে, দুইবার জরুরি বিভাগে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে বলেছে, সেলাই পরে কাটালেও চলবে।'

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'আমাদের জরুরি বিভাগের সেবা চালু হয়েছে গতকাল রাত থেকেই। চিকিৎসকদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা চলছে এবং আইসিইউ ও সিসিইউ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালছে। আজকের মধ্যে বাকি সেবা চালু হতে পারে।'

ঢামেকের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফ হোসেন বলেন, 'বহির্বিভাগের রোগীর সেবা জরুরি বিভাগে দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যান্য দিনের মতো আজ জরুরি বিভাগে রোগীরা আসছেন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।'

ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুই হাজার ৬০০ আসনের এই হাসপাতালে প্রায় চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার রোগী সেবা নিতে আসেন।

Comments

The Daily Star  | English

Banking fix may cost $5b-$6b

Says finance adviser; the amount is way below IMF’s $35b estimate

13h ago