হাসপাতালের ২ ধরনের চিকিৎসা বর্জ্য বাজারে বিক্রি হয়: টিআইবি

হাসপাতালের ২ ধরনের চিকিৎসা বর্জ্য অবৈধভাবে বাইরে বিক্রয় করা হয় বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ মঙ্গলবার সকালে এক অনুষ্ঠানে 'চিকিৎসা–বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক গবেষণার তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

টিআইবি জানিয়েছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারযোগ্য বর্জ্য এবং রিসাইকেল (পুনঃচক্রায়নযোগ্য) বর্জ্য বিক্রয় করা হয়।

টিআইবিরি গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চিকিৎসা বর্জ্যের অবৈধ ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বর্জ্য নষ্ট না করে কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়। একটি সুপরিচিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কালোবাজারে প্লাস্টিক চিকিৎসা বর্জ্যের অবৈধ ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া, স্থানীয় পর্যায়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আয়ের অন্যতম উৎস চিকিৎস বর্জ্য বিক্রয়।

একটি জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কেজি প্লাস্টিক চিকিৎসা বর্জ্য অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে বলেও জানায় টিআইবি।

চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধন ও নষ্ট করার অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে টিআইবি জানিয়েছে, বিধিমালা ২০০৮-এর তফসিল ১ অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য পুনঃব্যবহার রোধে রাবার, প্লাস্টিক নল ও বিভিন্ন ব্যাগ টুকরো করে কাটার নির্দেশনা থাকলেও তা পালনে ঘাটতি রয়েছে। 

সার্বিকভাবে ২৮ শতাংশ হাসপাতালে রাবার, প্লাস্টিকের ব্যাগ কাটা হয় না এবং ৩১ শতাংশ হাসপাতালে রাবার, প্লাস্টিকের নল কাটা হয় না। ২৮ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে প্লাস্টিকের ব্যাগ কাটা হয় না এবং ৩৪ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে রাবার ও প্লাস্টিকের নল কাটা হয় না। বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২৯ শতাংশ ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যাগ কাটা হয় না এবং ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে রাবার, প্লাস্টিকের নল কাটা হয় না।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতার চ্যালেঞ্জ হিসেবে বলা হয়েছে, বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট রঙের পাত্রের ঘাটতি রয়েছে। চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য ৬টি নির্দিষ্ট রঙের পাত্র রাখার নির্দেশনা থাকলেও জরিপকৃত হাসপাতালের ৬০ শতাংশে তা নেই। এসব হাসপাতালের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে বর্জ্যকর্মী সব ধরনের বর্জ্য একত্রে বালতি বা গামলায় সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে।

চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ঘাটতি হিসেবে বলা হয়েছে, বিধি অনুযায়ী বর্জ্য পরিশোধনে জন্য অটোক্লেভ যন্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও জরিপকৃত হাসপাতালগুলোর ৪৯ শতাংশে অটোক্লেভ যন্ত্র নেই। ফলে এসব হাসপাতালে চিকিৎসা উপকরণ পরিশোধন না করেই পুনঃব্যবহার করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী 'লাল' শ্রেণিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাসপাতালে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকা বাধ্যতামূলক হলেও ৮৩ শতাংশ হাসপাতালে ইটিপি নেই।

যেসব হাসপাতালে (১৭ শতাংশ) ইটিপি আছে, তাদের ১৬ শতাংশ হাসপাতালে এই ব্যবস্থা সচল নেই। ইটিপি না থাকায় অশোধিত চিকিৎসা বর্জ্য অপসারণ করা হয়।

চিকিৎসা বর্জ্য শোধনাগার ও ল্যান্ডফিলের ঘাটতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য শোধন ও অপসারণের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ ও অবকাঠামো তৈরির নির্দেশনা থাকলেও জরিপের আওতাভুক্ত বেশিরভাগ (৮০ শতাংশ) সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাতে চিকিৎসা বর্জ্য শোধনাগার নেই। মাত্র ৮টি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাতে শোধনাগার আছে, এর মধ্যে ৫টিতেই চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধন করা হয় না।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Jucsu election set for July 31 after 33-year gap

The first election to the Jahangirnagar University Central Students' Union (Jucsu) in 33 years will be held on July 31

19m ago