হিট স্ট্রোক এড়াবেন যেভাবে

প্রতীকী ছবি | শেখ এনামুল হক/স্টার

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান দাবদাহে হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে সরাসরি সূর্যের আলোতে কাজ না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চিকিৎসা না নিলে হিট স্ট্রোকও ব্রেন স্ট্রোকের মতোই মারাত্মক হতে পারে। বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে।'

এই অধ্যাপকের ভাষ্য, বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

'যারা রোজা রাখেন, তারা দিনের বেলায় পানি পান না করায় ডিহাইড্রেশনে ভুগতে পারেন। সাধারণত তারাই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন।'

সেজন্য ইফতার ও সেহরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান এবং তরমুজের মতো ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান।

তিনি আরও বলেন, 'তবে ডায়রিয়াজনিত রোগ এড়াতে পানি বা জুস স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ হওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'

চলমান দাবদাহ থেকে রক্ষায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) কিছু পরামর্শ দিয়েছে।

এই সমেয় কেউ যদি মাথা ঘোরা, দুর্বল, অস্থির বা তীব্র তৃষ্ণা ও মাথাব্যথা অনুভব করে, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তার ঠান্ডা জায়গায় চলে যাওয়া এবং তারপরে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা উচিত।

এই ধরনের আবহাওয়ায় হাইড্রেটেড থাকার জন্য পানি বা জুস পান করার পরামর্শও দিয়েছে ডব্লিউএইচও।

কারো যদি পেশিতে তীব্র ব্যথা বা খিঁচুনি হয় (বিশেষ করে পা, বাহু বা পেটে), তৎক্ষণাৎ শীতল জায়গায় গিয়ে বিশ্রাম নেওয়া এবং ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

যদি এরপরেও সেই তাপ এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় বা কেউ যদি অস্বাভাবিক উপসর্গ অনুভব করে এবং উপসর্গগুলো অব্যাহত থাকে, তাহলে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

তাপপ্রবাহের সময় নিজেকে রক্ষা করতে বাড়ির সবচেয়ে শীতল ঘরে, বিশেষ করে রাতে সেই ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও। যদি আপনার বাড়ি ঠান্ডা রাখা সম্ভব না হয়, তবে দিনের ২-৩ ঘণ্টা একটি শীতল জায়গায় (যেমন: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাবলিক ভবন) কাটানোর পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর পরামর্শে আরও বলা হয়েছে, দিনের যে সময় রোদের তাপ প্রখর থাকে, সে সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া এড়ানো এবং কঠোর শারীরিক কাজ এড়িয়ে চলা। সেক্ষেত্রে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এ ধরনের কাজ করা যেতে পারে।

'ছায়ায় থাকুন। শিশু বা প্রাণীকে পার্ক করা গাড়িতে রেখে যাবেন না', বলেছে ডব্লিউএইচও।

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

10h ago