তাপপ্রবাহে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি: শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতীদের ঘরে থাকার পরামর্শ

সারাদেশে টানা মৃদু থেকে মাঝারী তাপপ্রবাহে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। রোজায় দীর্ঘসময় পানি না খাওয়া অবস্থায় প্রচুর ঘাম হলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। হতে পারে হিট স্ট্রোক। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
heat wave
ছবি: পলাশ খান

সারাদেশে টানা মৃদু থেকে মাঝারী তাপপ্রবাহে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। রোজায় দীর্ঘসময় পানি না খাওয়া অবস্থায় প্রচুর ঘাম হলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। হতে পারে হিট স্ট্রোক। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগসহ নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ আরও ৫দিন অব্যাহত থাকবে।
 
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান বলেন, 'আগামী ৭২ ঘণ্টায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এসময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।'
  
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটার প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে সব বয়সের মানুষকে। রোজাদার ব্যক্তিরা রোজা রেখে বাইরে যাচ্ছেন। তীব্র গরমে বেশি ঘাম হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। আবার যারা রোজা রাখছেন না, তারা বাইরের খোলা খাবার, শরবত, ঠাণ্ডা পানি খেয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে।
   
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, 'এই তাপপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট তীব্র গরমে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। শরীর থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে মানুষের হৃদপিণ্ড ও নাড়ির গতি বেড়ে যায়। এ থেকে মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এই অবস্থাকে বলা হয়, হিট স্ট্রোক। এ পরিস্থিতির শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ছায়াময় স্থানে নিয়ে যেতে হবে। সম্ভব হলে শীতলতম স্থানে নিয়ে যেতে হবে। শরীরের কাপড় ঢিলে করে দিতে হবে। চোখে-মুখে পানি দিতে হবে। পাশাপাশি স্যালাইন এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করাতে হবে।'
 
তিনি এ পরিস্থিতিতে শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে বাইরের খাবার, শরবত, পানি, বরফ খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। এসময় বাইরে যাওয়ার সময় ঘর থেকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখারও পরামর্শ দেন তিনি। 
   
তিনি বলেন, 'প্রচণ্ড গরমে কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মামস, জলবসন্ত, ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। বয়স্ক, শিশু এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন- গর্ভবতীদের মধ্যে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।'
  
ইতোমধ্যেই দেশে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে ডা. লেলিন এসময় বয়স্ক, শিশু ও গর্ভবতীদের বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে সুতি কাপড় পরা, বাসার খাবার ও পানি সঙ্গে রাখার পরামর্শও দেন।
 
তিনি বলেন, 'এসময় শিশুদের মধ্যে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এ থেকে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।'

তাই এসময় শিশুদের ঘরের বাইরে না যাওয়া, ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি ও বরফ খাওয়া থেকে বিরত রাখার পরামর্শ দেন তিনি। 
 

Comments