মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্দশার কথা জানানো হলো জাতিসংঘকে

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক
মালয়েশিয়ায় দুর্দশায় বাংলাদেশি শ্রমিক। ছবি: ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে

মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় দেশটিতে বাংলাদেশের কয়েকশ অভিবাসী শ্রমিকের দুর্দশার কথা জানানো হলো জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয়কে।

আজ রোববার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসী শ্রমিক ও শ্রম অধিকারকর্মী অ্যান্ডি হল জেনেভায় জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের ওএইচসিএইচআরকে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, মালয়েশিয়ায় চাকরিহীন ও ঋণের জালে জড়িয়ে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকরা 'চরম পরিস্থিতি'র মধ্যে আছেন।

চিঠিতে তিনি মালয়েশিয়ায় অভিবাসী শ্রমিকদের জীবনযাত্রার নিম্নমান, বিশেষ করে ছোট জায়গায় বেশি মানুষের থাকা, অপর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সীমিত পরিমাণ খাবার ও ঋণভারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

তিনি নথিভুক্ত অভিযোগগুলো জাতিসংঘের বিশেষ দূতদের কাছেও পাঠিয়েছেন।

মালয়েশিয়া সরকারের হিসাবে দেশটিতে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক থাকার বিষয়টিও অ্যান্ডি হল চিঠিতে তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, 'ঘটনা পর্যালোচনা ও মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আমি ইউএনএইচআরসিকে অনুরোধ করছি মালয়েশিয়ার এই সংকটের সমাধানে ওএইচসিএইচআরের বিশেষ ব্যবস্থাগুলো কার্যকর ধরা হোক।'

অ্যান্ডি হল বলেন, 'মালয়েশিয়া সরকার স্বীকার করেছে যে সেখানে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি (বাংলাদেশি) অভিবাসী শ্রমিক আছেন। তারা জোরপূর্বক কাজ, আধুনিক দাসত্ব ও ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ।'

তিনি মনে করেন, কীভাবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করা সরকারের দায়িত্ব। যদি প্রবাসী শ্রমিকদের কাজের আবেদনগুলো সঠিক হয় তাহলে দেশটিতে অতিরিক্ত শ্রমিক থাকার কথা নয়।

সম্প্রতি, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন ইসমাইল বলেছেন যে, অভিবাসী শ্রমিক নেওয়ার নীতিমালা শিথিল ও এর সুযোগ নেওয়ায় দেশটির কারখানা ও সেবাখাতে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি শ্রমিক রয়ে গেছেন।

নথিভুক্ত এক ঘটনার বরাত দিয়ে অ্যান্ডি হল বলেন, যথাযথ খাবার ও থাকার ব্যবস্থা না থাকায় ৪০০ বাংলাদেশির চরম সংকটে থাকার অভিযোগ আছে।

তিনি বলেন, অভিযোগ আছে যে সেসব শ্রমিকরা খুবই ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকছেন। তারা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ছেন।

'এক কক্ষে ১৪ জন থাকছেন। আমি তাদের কাছ থেকে ভিডিও পেয়েছি। যে এজেন্টরা তাদেরকে এনেছে তারা এই শ্রমিকদের প্রত্যেককে খাবারের জন্য ২০০ রিঙ্গিত করে দিয়েছে। কিন্তু, এ দিয়ে বেশি দিন টিকে থাকা সম্ভব না।'

চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকদের পুরো বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন শ্রমিকরা ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছেন, কেননা তাদের হাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। তারা ভয়ে কোনো কাজের জন্যও ঘরের বাইরে যেতে পারেন না।

শ্রমিকদের এমন পরিস্থিতির মধ্যে রাখা হয়েছে যা দালাল, নিয়োগকর্তা ও মালয়েশিয়া সরকারের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে ওএইচসিএইচআর, মালয়েশিয়ার শ্রমবিভাগ ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের মন্তব্য নিতে পারেনি ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has found assets worth nearly Tk 40,000 crore in five countries which it believes were bought with money laundered from Bangladesh, said the Chief Adviser’s Office yesterday.

3h ago