গ্রিনল্যান্ড-পানামা খালের দখল নিতে সামরিক শক্তি ব্যবহারে দ্বিধা করবেন না ট্রাম্প

মার আ লাগোয় সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার আ লাগোয় সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্রাজ্য বিস্তারের পররাষ্ট্রনীতিতে মেতেছেন। জানিয়েছেন, এসব লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহারেও পিছপা হবে না তিনি।

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে পানামা খালের দখল নেওয়া, গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়া ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে রূপান্তরের মতো বিতর্কিত বক্তব্য রেখেছেন ট্রাম্প।

পাশাপাশি, ন্যাটো জোটের সদস্যদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর দাবি করার কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে আমেরিকা উপসাগর রাখবেন।

পানামা খালে ভিড়েছে জাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
পানামা খালে ভিড়েছে জাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ক্ষমতা গ্রহণের দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে ট্রাম্পের এই আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতিতে মার্কিন মিত্রদের কূটনীতিক স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

ফ্লোরিডায় বিলাসবহুল রিসোর্ট মার আ লাগোয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি বিশ্বকে আশ্বস্ত করতে পারবেন কী না, যে যুক্তরাষ্ট্র পানামা খাল ও গ্রিনল্যান্ডের দখল নিতে সামরিক বা অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করবে না।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, 'না, আমি এ ধরনের কোনো কিছু (অস্ত্র বা অর্থনৈতিক সক্ষমতার ব্যবহার) নিশ্চিত করতে পারছি না। তবে এটুকু বলতে পারি, (যুক্তরাষ্ট্রের) অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য এগুলো (পানামা খাল ও গ্রিনল্যান্ড) আমাদের প্রয়োজন।'

কানাডাকে অনেক বেশি সমর্থন ও সহায়তা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র, এমন অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। কানাডার কাছ থেকে পণ্য কেনা ও তাদেরকে সামরিক সহায়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এই মার্কিন নীতির সমালোচনা করে ট্রাম্প মত দেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সুবিধা হয় না।

তিনি দাবি করেন, দুই দেশের মাঝে টানা সীমারেখা 'কৃত্রিম'।

গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হলে ডেনমার্কের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে গ্রিনল্যান্ডকে নিজেদের ভূখণ্ডে পরিণত করা খুবই জরুরি। ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের আগেই 'ব্যক্তিগত' সফরে গ্রিনল্যান্ড গেছেন ট্রাম্প-পুত্র ডন জুনিয়র।

স্বশাসিত রাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অন্তর্ভুক্ত। ডেনমার্ক জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড 'বিক্রি' হবে না।

গ্রিনল্যান্ডে ব্যক্তিগত সফরে গেছেন ট্রাম্প পুত্র ডন জুনিয়র। ছবি: রয়টার্স
গ্রিনল্যান্ডে ব্যক্তিগত সফরে গেছেন ট্রাম্প পুত্র ডন জুনিয়র। ছবি: রয়টার্স

ট্রাম্পের এসব বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট্টে ফ্রেদেরিকসন বলেন, 'আর্থিক বিষয় দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদারের মধ্যে এ ধরনের সংঘাত ভালো কোনো বিষয় নয়।'

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এক্সে পোস্ট করে বলেন, 'আমরা হুমকিতে পিছু হটব না'।

তিনি দাবি করেন, কানাডা একটি শক্তিশালী দেশ। দেশটির মানুষ ও অর্থনীতি উভয়ই শক্তিশালী এবং এ বিষয়ে ট্রাম্পের কোনো ধারণা নেই।

পানামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাভিয়ের মার্তিনেজ-আচা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, 'পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পানামার বাসিন্দাদের হাতেই থাকবে।'

মেক্সিকোর অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্দ জানান, তার সরকার ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে বিতর্কে জড়াবে না।

'৩০ বছর পরও মেক্সিকো উপসাগরের নাম অপরিবর্তিতই থাকবে', বলেন তিনি।

নির্বাচনে জেতার পর মার আ লাগোয় এটাই ছিল ট্রাম্পের দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলন।

এই সংবাদ সম্মেলনে যা যা বলেছেন, নির্বাচনের প্রচারণার সময়েও একই ধরনের কথাবার্তা বলেছেন ট্রাম্প।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

4h ago