যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা এখনই শুরু: পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এপি

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বুধবার দীর্ঘ ফোনালাপ শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প 'তাৎক্ষণিকভাবে' ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস জানায়, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর পুতিনের সঙ্গে এটিই ট্রাম্পের প্রথম 'জ্ঞাত' ফোনালাপ। এই আলোচনা প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। 

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, 'রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ও বেশ ফলপ্রসূ ফোনালাপ করেছি। সেখানে আমরা ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলারের শক্তি এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।' 

ট্রাম্প জানান, 'একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে' একদিন রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যে 'বিশাল সুবিধা' পাবে, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন দুজন। যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি তারা 'একে অপরের দেশ সফর' করবেন বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।

পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছেন।

এদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা তাস জানায়, রাশিয়াও ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি দল গঠন শুরু করেছে। তবে সেই দলে কারা থাকবেন, তা জানাননি পেসকভ।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ঘোষণা দেন, ইউক্রেনের জন্য ২০১৪ সালের আগের সীমান্ত ফিরে যাওয়ার চিন্তাটা 'অবাস্তব'। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অধিগ্রহণের মাধ্যমে দেশটিতে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। 

ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন তিনি। 

ট্রাম্পের কথাতেও ছিল একই সুর। বুধবার ওভাল অফিসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ না দেওয়ার ব্যাপারে তিনি সম্মতি দিয়েছে। 

'আমি মনে করি এটি (ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া) বাস্তবসম্মত না,' বলেন ট্রাম্প।

গত বছরই পুতিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার দুটি শর্ত পূরণ না করলে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় বসবেন না। সেই দুটি শর্ত হচ্ছে—ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদের আশা ছাড়তে হবে এবং যুদ্ধে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া ইউক্রেনের চার অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

মার্কিন প্রশাসনের আলোচনায় এই দুটি শর্ত মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। 

গত সোমবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত তিন বছর সামরিক সহায়তা দিয়ে যাওয়ার বিনিময়ে কিয়েভের কাছে মূল্যবান খনিজ সম্পদ দাবি করেন ট্রাম্প। 

'আমি (জেলেনস্কি প্রশাসনকে) বলেছি, ৫০০ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের বিরল খনিজ চাই আমি। ওই অঞ্চলের জমি অনেক মূল্যবান। অনেক বিরল খনিজ, তেল ও গ্যাস আছে। আমাদের অর্থের প্রতিদান হিসেবে কিছু চাই আমি,' বলেন ট্রাম্প। 

Comments

The Daily Star  | English

Why landscape-based knowledge is critical for Bangladesh

How will we build the country without landscaping knowledge?

13h ago