তেলেঙ্গানায় সুড়ঙ্গ ধস

প্রবেশপথ থেকে ১৩ কিমি ভেতরে আটকে পড়া ৮ কর্মীর ১০০ মিটারের মধ্যে উদ্ধারদল

তেলেঙ্গানার সুড়ঙ্গে ধস। ছবি: এএফপি
তেলেঙ্গানার সুড়ঙ্গে ধস। ছবি: এএফপি

দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে সেচ দেওয়ার সুড়ঙ্গ তৈরির সময় আংশিকভাবে ধসে পড়লে আটকা পড়েন আট কর্মী। টানা তিন দিন ধরে উদ্ধারের চেষ্টা চললেও এখনো তাদেরকে বের করা সম্ভব হয়নি। তাদের অবস্থান থেকে মাত্র ১০০ ফুট দূরে এসে আর আগাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা।

সংবাদ সংস্থা এএফপি ও ভারতীয় গণমাধ্যম ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

আজ সোমবার তেলেঙ্গানার পর্যটন ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী জুপাল্লি কৃষ্ণ রাও আশঙ্কা করে জানান, শ্রীসায়লাম লেফট ব্যাংক ক্যানাল (এসএলবিসি) টানেলে আটকে পড়া কর্মীদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা 'নেই বললেই চলে'। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, এখনো উদ্ধারকাজ চলমান আছে।

সুড়ঙ্গের ভেতরের প্রতিকূল পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'এ ধরনের পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি নেই।'

'সেখানে উঁচু করে কাঁদা-মাটি জমেছে। ফলে হেঁটে আগানো যাওয়া যাচ্ছে না। উদ্ধারকর্মীরা কাঠের তক্তা ও রাবারের টিউব ব্যবহার করে এগিয়ে যাচ্ছেন।'

গত শনিবার হঠাৎ পানির প্রবাহ বেড়ে গেলে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গের একটি অংশ ধসে পড়ে।

সুড়ঙ্গ নির্মাণে ব্যবহৃত বোরিং মেশিনের কাছে থাকা কর্মীরা সরে যেতে পারলেও এর প্রবেশপথের কাছে থাকা আট প্রকৌশলী ও কর্মীরা ভেতরে আটকা পড়েন।

তেলেঙ্গানার সুড়ঙ্গে ধস। ছবি: এএফপি
তেলেঙ্গানার সুড়ঙ্গে ধস। ছবি: এএফপি

উদ্ধারের কাজে আছে ভারতের জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ)। তাদেরকে সহায়তা দিচ্ছে অন্যান্য সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্ক ফোর্স, নৌবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী।

তেলেঙ্গানার নগরকুরনুলে অবস্থিত শ্রীসায়লাম বাঁধের পেছনে নির্মাণাধীন এই সুড়ঙ্গের মোট প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার। দুর্ঘটনার সময় কয়েকজন কর্মী লিক সারাচ্ছিলেন।

সুড়ঙ্গের মুখ থেকে অন্তত ১৩ কিলোমিটার ভেতরে ধসের ঘটনাটি ঘটে। উদ্ধারকারীরা সেখান থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে আছেন। কিন্তু পর্যটনমন্ত্রী জানিয়েছেন, পানি ও কাদার কারণে আর সামনে আগাতে পারছেন না উদ্ধারকরমীরা, বিঘ্নিত হচ্ছে সার্বিক কার্যক্রম।

উদ্ধারকর্মীরা আটকে পড়া কর্মীদের উদ্ধারে আরও উপকরণ চেয়েছেন। গতকাল জানা গেছে, সুড়ঙ্গের দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখান দিয়ে ভেতরে পানি ঢুকছে, যা বের করে আনা প্রয়োজন।

পাশাপাশি, সুড়ঙ্গের বিধ্বস্ত অংশটি এখনো অস্থিতিশীল। বারবার পাথর নড়ে ওঠার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ছাদের বাকি অংশও ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পরও আটকে পড়া ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গের ভেতর বাতাস চলাচল ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর আছে। ফলে সেখানে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে না।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকারীরা আটকে পড়া কর্মীদের উদ্ধারে পাম্প দিয়ে পানি বের করছেন ও ভেঙে পড়া পাথর সরাচ্ছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Stop destroying nature, plant trees instead of cutting: Yunus

Protecting the environment should be a citizen-led movement, he says

27m ago