ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রগতি না হলে সরে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: মার্কো রুবিও

প্যারিসে বৈঠক শেষে মার্কো রুবিও। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর একটি ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে থামিয়ে দেবেন যুদ্ধ।

ক্ষমতাগ্রহণের তিন মাসের মাথায় ট্রাম্প প্রশাসন উপলব্ধি করছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধের সমাপ্তি সহজে আসবে না।

আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আবারও হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতি না দেখলে এই যুদ্ধ ও যুদ্ধবিরতির আলোচনা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে পারে ওয়াশিংটন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ইউরোপ ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ প্যারিস থেকে ফেরার আগে এই মন্তব্য করেছেন রুবিও।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে রুবিও বলেন, 'যুদ্ধবিরতি আসলেই সম্ভব কি না, সেই সিদ্ধান্ত আমাদের খুব দ্রুত নিতে হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিষয়টা যাচাই করতে হবে।'

অথচ গতকালই রুবিও এবং মার্কিন কর্মকর্তারা প্যারিসে ইউক্রেন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে। সেই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শান্তি পরিকল্পনার খসড়া বেশ সাড়া পেয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত বিতর্কিত খনিজ চুক্তি সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে ইউক্রেন।

কিন্তু আজ রুবিও বলেন, তিনি ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ প্যারিসে এসেছেন 'যুদ্ধ থামাতে নির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া লাগতে পারে' সেই আলোচনা করতে এবং শান্তি প্রক্রিয়া আদৌ সম্ভব কি না, সেটি জানতে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমাদের কাছে যদি মনে হয় (যুদ্ধবিরতি) সম্ভব না, বাস্তবায়নযোগ্য না, তাহলে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) হয়তো বলবেন, আমাদের কাজ শেষ।'

'এটা আমাদের যুদ্ধ না। আমরা যুদ্ধ শুরু করিনি। যুক্তরাষ্ট্র গত তিন বছর ধরে ইউক্রেনকে সাহায্য করেছে এবং আমরা চাই যুদ্ধটা শেষ হোক। কিন্তু এটা আমাদের যুদ্ধ না,' বলেন তিনি।

'সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) ৮৭ দিন ধরে এই যুদ্ধে ইতি টানার চেষ্টা করে আসছেন। এখন এই পর্যায়ে যুদ্ধটা আদৌ শেষ করা সম্ভব কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের,' যোগ করেন রুবিও।

ইউক্রেন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তিচুক্তি প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধ-বিরতির ওই খসড়া তার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না।

এদিকে, রাশিয়া বৃহস্পতিবার রাতভর ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। খারকিভে এক আবাসিক এলাকায় হওয়া হামলায় অন্তত একজন নিহত ও ৬৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ অনেকাংশই কমিয়ে দিয়েছেন। সামনে এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম। এই সুযোগে দেশটিতে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে মস্কো।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

4h ago