কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভ, শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

গত বছর বড় আকারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পর গতকাল আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরির অংশবিশেষ দখল করে নেয় 'ফিলিস্তিনপন্থি' শিক্ষার্থীরা।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা ছয় তলা লাইব্রেরি ভবনে অভিযান চালিয়ে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে।

পরবর্তীতে তাদেরকে প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে ভ্যান ও বাসে তুলে নেয় পুলিশ। বাটলার লাইব্রেরি থেকে যারা সরে যেতে অস্বীকার করে, মূলত তাদেরকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ক্যাম্পাসে পুলিশ হাজির হয়। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির তিন তলার প্রধান কক্ষটিতে অনধিকার প্রবেশ করেছে এবং তা দখল করে রেখেছে।

সামাজিক মাধ্যমের ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মুখোস পরে আছেন। তারা টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে ড্রাম বাজাতে থাকেন এবং 'স্ট্রাইক ফর গাজা' ও 'লিবারেটেড জোন' লেখা ব্যানার উঁচিয়ে ধরেন। লরেন্স এ. ওয়েইন নামের পাঠকক্ষে তারা তাদের এই কর্মসূচি পালন করেন।

গত বছর ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে কলাম্বিয়ার ওপর চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ইহুদিবিদ্বেষী এবং কর্তৃপক্ষ ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

তবে কলাম্বিয়ার বিক্ষোভকারী ও ইহুদি শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলো পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেছে, ট্রাম্প ও তার সহযোগী ইসরায়েলপন্থি রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা অন্যায্যভাবে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকে ইহুদিবিদ্বেষের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন মার্চে ঘোষণা দেয়, তারা কলাম্বিয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা লাখো ডলারের বৈজ্ঞানিক গবেষণা বাজেট বাতিল করেছে। এই পদক্ষেপের পঅর থেকেই কলাম্বিয়ার ট্রাস্টি বোর্ড প্রশাসনের সঙ্গে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার দিনের শেষে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, তারা পুলিশের সহায়তা চেয়েছিল।

লাইব্রেরি 'ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেয়ে' বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জননিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানায় কলাম্বিয়া।

নিউইয়র্ক পুলিশ নিশ্চিত করেছে, বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের সঠিক সংখ্যা জানায়নি পুলিশ।

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচাল সামাজিক মাধ্যমে জানান, 'শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার সবারই আছে। তবে সহিংসতা, ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।'

ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: রয়টার্স

ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগে লাইব্রেরি ভবনের সামনের দরজাগুলো বন্ধের চেষ্টা চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা, যাতে নতুন করে আর কোনো শিক্ষার্থী ভেতরে ঢুকতে না পারে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের এক দফা হাতাহাতি হয়ও।

এই ঘটনায় অন্তত এক শিক্ষার্থী আহত হন। অপর এক ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়।

লাইব্রেরিতে ঢুকতে না পেরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ফটকের বাইরের সড়কে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন দাবি করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে।

বুধবার ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ১৪ দশমিক আট বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে 'কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথেইড ডাইভেস্ট' নামের শিক্ষার্থী সংগঠনের একটি জোট।

এই দাবিগুলো নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসনে সহায়তা করে এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাচ্ছে কলাম্বিয়ার শিক্ষার্থীরা।

২০২৪ সালে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলি আগ্রাসন বিরোধী বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় কলাম্বিয়া।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

5h ago