কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়: বহিষ্কার সত্ত্বেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার শিক্ষার্থীদের

শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের পরও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের পরও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা শুরু করেছে। নিউইয়র্ক সিটির ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ বন্ধের নির্দেশ অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে বহিষ্কার সত্ত্বেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে শিক্ষার্থীরা। 

গতকাল সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

এর আগে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা ব্যর্থ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনুশ শফিক এক বিবৃতিতে জানান, বিক্ষোভের আয়োজক ও শিক্ষক নেতাদের মধ্যে আলোচনা হলেও শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে স্থাপিত কয়েক ডজন তাঁবু সরিয়ে নিতে অস্বীকার করে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভের কেন্দ্রে রয়েছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার সকালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের স্থানীয় সময়য় দুপুর ২টার মধ্যে বিক্ষোভ বন্ধ করে একটি ফর্মে সই করতে হবে।

ফর্মে বলা আছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এর অন্যথা হলে তাদেরকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হবে এবং তারা 'সন্তোষজনকভাবে' চলমান সেমিস্টার শেষ করতে পারবেন না।

বিক্ষোভকারিরা জানিয়েছেন, তাদের তিন দাবি মানা না পর্যন্ত তারা তাঁবু সরাবেন না এবং অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন। দাবিগুলো হল, ইসরায়েল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিনিয়োগ সরিয়ে নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সব ধরনের শাস্তি থেকে দায়মুক্তি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা সম্পর্কে জানার পর কলাম্বিয়া স্টুডেন্ট আপারথেইড ডাইভেস্ট কোয়ালিশন নামের ছাত্রসংঘ একটি সংবাদসম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয় বলেন, 'এ ধরনের ঘৃণ্য ও ভয় দেখানোর কৌশল ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যুর কাছে কিছুই না। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত বা আমাদেরকে বল প্রয়োগ করে এখান থেকে সরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ বন্ধ হবে না।'

শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের পরও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের পরও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র বেন চ্যাং এক ব্রিফিংয়ে জানান, 'আমরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরবর্তী ধাপ হিসেবে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করতে শুরু করেছি।'

'(বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের) তাঁবুগুলো আমাদের ইহুদি ধর্মাবলম্বী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং এখানে অনেক বেশি শব্দ হচ্ছিল, যা আমাদের মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে শিক্ষা, জ্ঞানলাভ ও ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাধার সৃষ্টি করছিল', যোগ করেন তিনি।

এর আগে শফিক জানান, কলাম্বিয়া বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ইসরায়েলে অর্থায়ন বন্ধ করবে না। বরং তিনি গাজার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অবকাঠামোয় অর্থায়নের প্রস্তাব দেন।

অপরদিকে পুলিশ টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিলে অংশ নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর গোলমরিচের গুঁড়া প্রয়োগ করে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

5h ago