দক্ষিণ কোরিয়ায় আগাম নির্বাচন শুরু, জরিপে এগিয়ে উদারপন্থি লি

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: এএফপি

ছয় মাস আগে হুট করে দেশে সামরিক আইন জারি করে বসেন দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল। ওই ঘটনার সূত্রে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়, যার ফলশ্রুতিতে অভিসংশিত হয়ে পদ হারান ইউন।

বেশ কয়েক মাসের গোলযোগ ও একের পর এক অস্থায়ী ও ভারপ্রাপ্ত নেতার আসা যাওয়ার পর নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আজ আগাম নির্বাচনে আজ ভোট দিচ্ছেন দেশটির মানুষ।

এএফপি জানায়, সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। যে কোনো নির্বাচনী সহিংসতা এড়াতে সড়কে হাজারো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ জরিপে অন্যদের থেকে এগিয়ে আছেন উদারপন্থি নেতা লি জায়-মিউং। সর্বশেষ গ্যালাপ জরিপে ৪৯ শতাংশ ভোটার তাকে সেরা প্রার্থীর রায় দিয়েছেন।

রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) কিম মুন-সু গ্যালাপ জরিপে ৩৫ শতাংশ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। অন্যান্য জরিপেও তিনি লি'র চেয়ে পিছিয়ে আছেন।

ভোটার পার্ক ডং শিন (৭৯) এএফপিকে বলেন, 'নতুন করে দেশ গড়ে তুলতে' তিনি ভোট দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ইউন যেভাবে সামরিক আইন জারি করেন, সেটা 'আমাদের আগের দিনের স্বৈরশাসকদের সাজে।'

তিনি এমন এক প্রার্থীকে ভোট দেবেন যিনি এ ধরনের হঠকারী কাজ না করে নিজের দায়িত্বগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকবেন।

সিউলের জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত মোট ৬২ দশমিক এক শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে আগাম ও বিদেশে বসবাসরত মানুষের ভোটও রয়েছে। এর আগের নির্বাচনে একই সময়ে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ভোট শেষে বুথ ফেরত জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আশা করা হচ্ছে, এই জরিপ থেকেই নির্বাচনের ফলাফলের স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।

২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বুথ ফেরত জরিপের সঙ্গে প্রকৃত ফল হুবহু মিলে গিয়েছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: এএফপি

এবারের ভোটে জয়ী প্রার্থীকে গত কয়েক মাসের সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্রুত বেশ কিছু বড় সমস্যার সমাধান করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের সঙ্গে রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতিকে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তৈরি করা, দক্ষিণ কোরিয়ার অতি নিম্ন জন্মহারের মোকাবিলা ও উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধনশীল অস্ত্র সম্ভারের বিপরীতে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর কয়েক মাস দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো নেতা ছিলেন না। এ বিষয়টিই ভোটারদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলে আগের প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে শাসনভার বুঝিয়ে দিতে এক মাস সময় পান। সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত নেতার মেয়াদ তার পূর্বসূরির শেষ কর্মদিবস শেষে রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে যায়।

তবে আগাম নির্বাচনে সেই সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোটের ফলকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়ার মুহূর্ত থেকে নতুন নেতার মেয়াদ শুরু হয়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English
July uprising and the rise of collective power

July uprising and the rise of collective power

Through this movement, the people of Bangladesh expressed their protest using a language shaped by long-standing discontent.

10h ago