ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কতটা ক্ষতি করতে পারল যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় 'অত্যন্ত সফল' হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলার পর সামাজিক মাধ্যমে উল্লাস প্রকাশ করে ইরানকে পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকার জন্য হুমকিও দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, 'এখনো বহু লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে।'
এর কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ইরানের 'শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায়' হামলার পরিণতি 'চিরস্থায়ী হবে'।
এই পাল্টাপাল্টি হুমকির মধ্যে হামলার প্রকৃত প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় কি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে?
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের সবচেয়ে বড় ও সুরক্ষিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোরদো-তে মার্কিন হামলার প্রভাব ঠিক কতটা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এক ইরানি আইনপ্রণেতার ভাষ্যমতে, স্থাপনাটির কেবল বাহ্যিক বা সামান্যই ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরান ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে পাওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো বলছে, হামলার পর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি। এ থেকে বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, হামলার আগেই হয়তো ইরানি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত সেখান থেকে সরিয়ে ফেলেছে।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলেছে, সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আবার শুরু করার সক্ষমতা রয়ে গেছে। কারণ, তাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা অক্ষত রয়েছে। এর পাশাপাশি, দেশটির এমন গোপন স্থাপনাও থাকতে পারে, যা এখনো হামলা থেকে সুরক্ষিত।
তবে ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী হামলাটি যদি সত্যিই 'চোখধাঁধানো সামরিক সাফল্য' হয়ে থাকে, তাহলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। এর ফলে দেশটির এই কর্মসূচি কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণ নির্মূল হওয়ার দাবির সঙ্গে একমত নন বিশ্লেষকরা।
Comments