ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে গোলাবর্ষণ

থাইল্যান্ডের গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিনচে প্রদেশে একটি বৌদ্ধ মন্দির। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। তারপরও সীমান্তে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে দেশ দুটি।

আজ রোববার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষ আজ চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। 

আজ ভোরেও বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। 

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার সকালে থাইল্যান্ড একাধিক স্থানে গোলাবর্ষণ ও স্থল হামলা চালিয়েছে। 

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, মন্দির ও স্থাপনাগুলোতে ভারী গোলাবর্ষণ করেছে থাইল্যান্ড।

এদিকে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আজ ভোরে কয়েকটি এলাকায় বসতবাড়ির কাছে গুলিবর্ষণ করেছে কম্বোডিয়া।
 
সুরিন প্রদেশের গভর্নর রয়টার্সকে জানান, সেখানে গোলাবর্ষণে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু গবাদি পশু মারা গেছে।

রয়টার্সের সংবাদকর্মীরাও ভোরে থাইল্যান্ডের সিসাকেট প্রদেশে গোলাবর্ষণের শব্দ শুনেছেন, তবে এটি সীমান্তের কোন প্রান্ত থেকে হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি।

এর আগে, শনিবার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প জানান, তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন। সংঘর্ষ বন্ধে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেন, 'উভয় দেশই তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চাইছে।'

ট্রাম্পের সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়ে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, 'কম্বোডিয়া দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।'

অন্যদিকে, থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেন, 'আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্বেগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং থাইল্যান্ড নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতির প্রতি সম্মত।'

তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে থাইল্যান্ড আন্তরিক মনোভাব দেখতে চায় বলেও জানান তিনি।

গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র এই সংঘর্ষে চারদিনে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই থাই বেসামরিক নাগরিক।

দুই দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থল সীমান্তের অনির্ধারিত অংশ নিয়ে বহু বছর ধরে বিবাদ চলমান রয়েছে, যেখানে প্রাচীন হিন্দু মন্দির 'তা মুয়েন থম' ও ১১ শতকের 'প্রেহা ভিহিয়ার' মন্দিরের মালিকানা এই বিবাদের মূল কেন্দ্র।
 

Comments

The Daily Star  | English

Complete reforms in 2yrs after polls

Parties urged in draft July Charter; opinions sought

4h ago