শীতে কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে ৫ খাবার

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মের কাঠফাটা গরমে সারাদিন যেমন আমাদের পিপাসা লাগে, শীতে কিন্তু আমরা খুব একটা পিপাসা অনুভব করি না। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ে পানি বা শরবত পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করলেও শীতকালে তার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়াও, শীতে শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য সারাদিনে অনেকবার চা বা কফি পান করা হয়। 

শীতকালে পানি কম পান করা, প্রচুর চা বা কফি পান করা, কম ব্যায়াম করা বা ফাইবারযুক্ত খাবার কম খাওয়ার কারণেই অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশি দেখা যায়। পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না, আর এর ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা লেগেই থাকে। এ ছাড়াও, খাওয়া-দাওয়ায়ও অনীহা বা অরুচির মতো সমস্যা দেখা দেয়। 

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কম-বেশি সব বয়সের মানুষই ভোগেন। তবে বেশ কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনার নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সাঈদা লিয়াকতের কাছ থেকে চলুন জেনে নিই, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে রোজ কী কী খাবেন- 

খেজুর 

খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ একটি ফল। এ ছাড়াও, খেজুর মিষ্টি এবং ঠাণ্ডা প্রকৃতির হয়। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য, হাইপার এসিডিটি, জয়েন্টে ব্যথা, চুল পড়া বা লো এনার্জিতে ভুগছেন, তাদের জন্য সেরা খাবার হতে পারে খেজুর। প্রতিদিন সকালে খালিপেটে হালকা গরম পানিতে ২-৩টি ভেজানো খেজুর খান। খেজুরে আছে এমন কিছু পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। কখনো কখনো ডায়রিয়ার জন্যও এটা বেশ উপকারী। 

মেথি বীজ 

এক চা চামচ মেথি বীজ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে খালিপেটে খেতে পারেন। এ ছাড়াও, মেথি বীজ গুড়ো করে নিন। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস হালকা গরম পানির সঙ্গে এক চা চামচ মেথির গুড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। 

ঘি 

গরুর দুধের ঘি মেটাবলিজম উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি শরীরে হেলদি ফ্যাট বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন, যেমন: ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-কে শোষণের জন্য প্রয়োজন। এক গ্লাস উষ্ণ গরুর দুধের সঙ্গে এক চা চামচ গরুর ঘি দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য দারুণ কাজ করে। তবে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ঘি না খাওয়াই উচিত। 

আমলকী 

আমলকী বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করতে পারে। প্রতিদিন সকালে খালিপেটে আমলকী খেলে দারুণ উপকার পাবেন। এক চা চামচ আমলকীর গুড়ো বা ৩টি তাজা আমলকীর রস খেতে পারেন। 

কিশমিশ 

কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে দারুণ কার্যকর। তবে ভেজানো কিশমিশ খাওয়া ভালো। কারণ, শুকনো খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে এগুলো সহজেই হজম হবে। 

এ ছাড়াও, শীতকালে পাওয়া যায় হরেক রকম শাক-সবজি। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, শিম, টমেটো ও মুলাসহ নানারকমের সবজি। আরও পাওয়া যায় বিভিন্ন রকমের শাক, যেমন: লালশাক, পালংশাক ও মূলা-শাক ইত্যাদি। এসব শাক-সবজিতে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে যেমন সাহায্য করে তেমনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও মলদ্বারের ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

শীতে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে বাঁধাকপি সেদ্ধ করে সঙ্গে গাজর, শসা, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, অলিভ অয়েল ও সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। এমনকি কিছুটা চিজও মেশানো যেতে পারে। আর প্রতিদিন অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পানি আপনার হজম প্রক্রিয়াসহ নানা কাজে যেমন সাহায্য করে, তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে। 

দিনে ২ থেকে ৩ কাপের বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।

 

Comments

The Daily Star  | English

Pakistan postpones foreign minister's visit to Bangladesh

The development comes amid escalation of tension between India and Pakistan following a terrorist attack

29m ago