সুস্থতার জন্যে যা করণীয়

জীবনধারায় পরিবর্তন ও খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে নতুন বছরের শুরুটা হতে পারে দারুণ সময়। যদিও খুব অল্প সংখ্যক মানুষ তাদের সংকল্পে অটল থাকতে পারেন, তবুও নতুন বছরে স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য নেওয়া যেতে পারে বেশ কিছু সংকল্প।

জীবনধারায় পরিবর্তন ও খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে নতুন বছরের শুরুটা হতে পারে দারুণ সময়। যদিও খুব অল্প সংখ্যক মানুষ তাদের সংকল্পে অটল থাকতে পারেন, তবুও নতুন বছরে স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য নেওয়া যেতে পারে বেশ কিছু সংকল্প।

ওজন কমান

উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে সুস্বাস্থ্যের জন্য ওজন কমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওজন কমার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের ঝুঁকি কমতে শুরু করে। ওজন কমাতে চাইলে স্বাস্থ্যকর খাবার খান ও নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার

স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে ২টি বিষয় জড়িত। প্রথমত, কী খাচ্ছেন এবং দ্বিতীয়ত, কীভাবে খাচ্ছেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল ও শাক-সবজি থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফল ও শাক-সবজিতে ক্যালোরি ও চর্বি কম থাকে, ফাইবার বেশি থাকে এবং এগুলো ভিটামিন ও খনিজের ভালো উত্স। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে।

খুব দ্রুত খাওয়া ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। খাওয়ার সময় টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে থেকে খাবারটিই উপভোগ করতে হবে। খাওয়ার সময় আপনার পেট ভরে গেলে মস্তিষ্কে সেই বার্তা যেতে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই পেট ভরে গেছে, এমন অনুভব হওয়ার আগেই খাওয়া বন্ধ করা উচিত।

অলস শুয়ে-বসে থাকা কমান

নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি শরীরকে সার্বক্ষণিক সক্রিয় রাখার জন্য অলসভাবে শুয়ে-বসে সময় কাটানো এড়িয়ে চলা উচিত। দৈনন্দিন কাজে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমেই যা সম্ভব। যেমন: দোকানের দরজার একদম কাছে গাড়ি পার্ক না করে একটু দূরে পার্ক করা এবং হেঁটে দোকানে যাওয়া, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করা, টেলিভিশন দেখার সময় সহজ কিছু ব্যায়াম করা।

শারীরিকভাবে যত বেশি সক্রিয় থাকতে পারবেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ততটাই ভালো বোধ করবেন।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

প্রতি বছর নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। এতে করে ছোটখাট স্বাস্থ্য সমস্যা বড় আকার ধারণের আগেই শনাক্ত ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করলেও প্রতি বছর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে ভুলবেন না।

মানসিক চাপ কমান

মানসিক চাপ কমানোর উপায় জানা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতিরিক্ত চাপ অনুভব করলে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, হাঁটা বা গান শোনার মতো সাধারণ কাজগুলো সহায়ক হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলে। তাই এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বের করার কোনো বিকল্প নেই।

পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম জরুরি

ভালো ঘুম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক সুস্থতা বাড়ায়। আরামদায়ক ঘুমের জন্য রুটিন তৈরি, ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টেলিভিশন দেখার সময় কমানো এবং ভালো ঘুমের পরিবেশ তৈরি প্রয়োজনীয় বিষয়। যদি অনিদ্রার সমস্যা থাকে, তাহলে মানসিক চাপ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

ধূমপান বন্ধ করুন

ধূমপান শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের ক্ষতি করে। এ ছাড়া, জর্দাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার খাওয়া তামাক মুখের ক্যানসার সৃষ্টি করে এবং নিকোটিন-আসক্তির কারণ হতে পারে। কাজেই সুস্থ থাকতে যেকোনো প্রক্রিয়াতেই তামাক সেবন বন্ধ করার পরিকল্পনা করুন।

সংকল্প বাস্তবায়ন

সুস্থ থাকার জন্য যেসব সংকল্প গ্রহণ করবেন, বছরজুড়ে তার বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে যায়। কাজেই জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই সংকল্প নির্ধারণ করে তা নিয়মিত মেনে চলা উচিত। এতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। স্বাস্থ্যকর নতুন অভ্যাস তৈরি করতে সময় ও ধৈর্য শক্তি প্রয়োজন।

সংকল্পের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন: ওজন কমাতে চাওয়ার বদলে ঠিক কতটা ওজন কমানো প্রয়োজন বা কতটা ওজন কমাতে চান, তা নির্ধারণ করুন। ব্যায়াম করতে চাওয়ার বদলে সপ্তাহে প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

লক্ষ্য নির্ধারণে বাস্তববাদী হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হঠাৎ করে অনেক বেশি পরিমাণ শারীরিক কসরত শরীরের জন্য ভালো নাও হতে পারে। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়াতে হবে। একইভাবে নতুন কোনো অভ্যাস শুরু করতে চাইলে হঠাৎ অনেক বেশি চাপ নেওয়া ঠিক হবে না।

নতুন অভ্যাস তৈরির ক্ষেত্রে শুরু থেকেই একেবারে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা সফলতার অন্তরায় হতে পারে। যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আপনার লক্ষ্য হয়, তাহলে হঠাৎ করেই পছন্দের সব খাবার খাওয়া ছেড়ে দেবেন না। ধীরে ধীরে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন।

অনুবাদ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago