ঢাকায় প্রেম করা কি অনেক ব্যয়সাপেক্ষ?
ঢাকা শহরে প্রেম কি সাশ্রয়ী নাকি অতিরিক্ত ব্যয়সাপেক্ষ? সিঙ্গেলদের জন্য এই বিতর্ক যতটা মজার, রোমান্টিক কাপলদের জন্য ততটাই চাপের। কিন্তু, প্রেমের ক্ষেত্রে খরচের বাস্তবতা কি সত্যিই অনেক কঠিন?
প্রেমের তীরে বিদ্ধ হলে সঙ্গীর সঙ্গে কোথাও যেতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। রেস্টুরেন্টের শহর ঢাকায় সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য অসংখ্য রেস্টুরেন্টও আছে। কিন্তু, কোন রেস্টুরেন্টে খাবেন, তা নির্ভর করবে আপনার মানিব্যাগের স্বাস্থ্যের ওপর।
ধরুন, ঢাকার সুন্দর একটি ক্যাফেতে গিয়ে পছন্দের দুই কাপ কফির সঙ্গে দুটো ডেজার্ট অর্ডার করলেন। আপনার আপাত 'সাদাসিধা' এই খাবারের খরচই হবে এক হাজার টাকার বেশি। এ খরচ দেখে আপনার মনে হতেই পারে, এর চেয়ে তো খিচুড়ি খাওয়াই ভালো ছিল!
কোনো রেস্টুরেন্টে দুপুরের বা রাতের খাবার খেতে গেলে জনপ্রতি অন্তত ৫০০-৬০০ টাকা খরচ হবে। মূল খাবারের সঙ্গে কোমল পানীয় ও ডেজার্ট যোগ করলে মোট খরচ আড়াই হাজার ছাড়াতে পারে। অর্থাৎ, ঢাকায় সঙ্গীকে নিয়ে খাবারের আনন্দ উপভোগের জন্য যেমন অসংখ্য ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট আছে, তবে সেজন্য আপনাকে প্রচুর খরচও করতে হবে।
আবার ধরুন, আপনি স্ট্রিট ফুড খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ঢাকা যেমন অভিজাত রেস্টুরেন্টের জন্য বিখ্যাত, আবার সমৃদ্ধ স্ট্রিট ফুডের জন্যও বিখ্যাত। স্ট্রিট ফুডের দাম তুলনামূলক কম হলেও ফুচকা, চটপটি, হালিম কিংবা মশলাদার অন্যান্য খাবারে একবার মজে গেলে সেটিও মানিব্যাগের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
এত খরচের কথা শুনে এখনই হাল ছেড়ে দিবেন না যেন! ঢাকার মতো দামি শহরে রোমান্স ও অর্থ একে অপরের পরিপূরক, এটা সত্যি। তবে কম খরচেও রোমান্স সম্ভব। সঙ্গীকে নিয়ে কোনো পার্কে যেতে পারেন। পার্কের বেঞ্চে বসে কিংবা লেকের পাড়ে বসে তার সঙ্গে গল্প আর আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন। পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে পছন্দের মানুষের সঙ্গ আপনার সময়কে যথার্থ করে তুলবে। ছবি তোলার জন্যও পার্ক সুন্দর জায়গা। পার্কে গেলে ভালো সময়ও কাটানো যাবে, আবার অতিরিক্ত খরচও হবে না।
একসময় গুলশান ও বনানীকে 'অভিজাত জোন' হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যেখানে ডিনার করতে যাওয়ার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত 'ব্যয়বহুল'। ঢাকার কুখ্যাত ট্রাফিক জ্যাম পেরিয়ে সেখানে যাওয়াটাও ছিল বেশ ঝামেলাপূর্ণ। বর্তমানে ধানমন্ডি হয়ে উঠেছে ঢাকার রোমান্টিক কাপলদের আরেক পছন্দের গন্তব্য। প্রেম-ভালোবাসা তো আর ভৌগলিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে বৈষম্য করে না। ধানমন্ডিই এখন ঢাকার অন্যতম জনপ্রিয় জোন হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে রেস্টুরেন্টের যেমন কোনো কমতি নেই, অভাব নেই শপিং মলেরও। আবার ধানমন্ডি লেকেও অফুরন্ত সময় কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ আছে।
তাই আপনি অভিজাত স্থান, স্ট্রিট ফুড কিংবা পার্ক—যেখানেই যান না কেন, ঢাকায় প্রেমের খরচ ওয়াইফাইয়ের মতো, কখনো আপনার খরচ বেশি হবে, কখনো কিছুটা কম। খরচের হিসাবের বাইরেও হাসি, আনন্দ আর রোমান্সে ভরে উঠুক ঢাকার প্রেমের গল্পগুলো।
অনুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল।
Comments