কক্সবাজারে সেরা ৫ সমুদ্র সৈকত
সমুদ্রের পাড়ে বসে প্রিয় পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্ত দেখার কথা ভাবলেই মাথায় আসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নাম। সমুদ্রের দীপ্তিময় সৌন্দর্যের সাক্ষী হওয়ার জন্য আপনার তালিকায় লাবনী পয়েন্ট, ইনানী বা হিমছড়ি ছাড়াও এবার যুক্ত হতে পারে আরও কয়েকটি স্থান।
পরের বার যখন কক্সবাজারে যাবেন, ভ্রমণের স্বাদ উপভোগ করতে এমন অসাধারণ সমুদ্র সৈকতগুলো দর্শন করতে ভুলবেন না যেন!
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত
ইনানী সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কোলাহলশূন্য এই সৈকতের পাড়ে ঘোরাঘুরি করার সময় যে কারও মন প্রশান্তিতে ভরে যাবে নিমেষেই। সেন্ট মার্টিনের মতো নীল পানির পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ অন্যান্য সৈকতের তুলনায় বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এই সৈকতের কিছু কিছু জায়গায় দেখা মেলে বিভিন্ন আকারের নুড়ি-পাথর। এ ছাড়া সৈকতের ধারে দেখতে পাওয়া যায় লাল কাঁকড়ার ঝাঁক। পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাওয়া যায় ভাড়ার বিনিময়ে কোয়াড মোটরগাড়ি এবং ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা।
সোহনখালী সমুদ্র সৈকত
শত শত সাম্পান বা জেলে নৌকা ঘেরা সমুদ্র উপকূল মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সোহনখালী সমুদ্র সৈকত। মাছ ধরার দীর্ঘ যাত্রা শেষে বিশ্রাম করতে জেলেরা তাদের নৌকাগুলো নোঙর করে কলাতলী থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতে। জড়ো হওয়া রঙিন সাম্পানগুলো সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যময় দৃশ্যকে আরও মোহনীয় করে তোলে। সোহনখালী সমুদ্র সৈকতের অবস্থান লোকালয় থেকে বেশ খানিকটা দূরে হওয়ায় দিনের বেলা হাতে সময় নিয়ে সেখানে ভ্রমণ করতে যাওয়া ভালো।
বেস্টওয়ে লং বিচ
কলাতলী থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে অবস্থিত বেস্টওয়ে লং বিচের সৌন্দর্য এককথায় অসাধারণ। সমুদ্রের চিরায়ত সৌন্দর্যের চেয়ে এই সৈকতের বালিময় পরিবেশে সবুজ গাছের সারির ছবি যে কাউকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। সেইসঙ্গে বেস্টওয়ে লং বিচের নীল পানি সমুদ্রপ্রিয় মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে উপভোগ করার সুযোগ দেয়; যা অন্যান্য জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতে পাওয়া যায় না। তাই ইনস্টাগ্রামে আপলোডের জন্য আদর্শ ছবি পেতে হলে সেখানে না গেলেই নয়।
সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
কক্সবাজারের ব্যস্তময় পরিবেশ থেকে মাত্র ৪০ মিনিট দূরে অবস্থিত সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পাতে বিশ্রামের জন্য রয়েছে বিলাসবহুল থাকার জায়গা, সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার এবং স্পা-এর ব্যবস্থা। তাদের রয়েছে ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গা বেষ্টিত নিজস্ব বিশাল সমুদ্র সৈকত। সেখান থেকে উপভোগ করা যায় পূর্ব দিকের সবুজ পাহাড় এবং পশ্চিমের অন্তহীন সমুদ্রের এক অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য। বিলাসিতা এবং মানসিক প্রশান্তির বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কক্সবাজারের কোলাহল থেকে দূরে থেকেই সমুদ্রের নির্মলতা উপভোগ করার জন্য সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা'র জুড়ি মেলা ভার।
মারমেইড বিচ রিসোর্ট
মারমেইড বিচ রিসোর্টকে বাদ দিয়ে কক্সবাজারের সেরা সমুদ্র সৈকতের তালিকা করার কথা ভাবাটাই যেন অসম্ভব। রামুতে অবস্থিত জনশূন্য পরিবেশে মনোমুগ্ধকর সময় কাটানোর জন্য এই রিসোর্টে ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সবকিছুর। দ্রুত সৈকতে যাওয়ার সুবিধাসহ রিসোর্টে রয়েছে চমৎকার রেস্তোরাঁ, প্রতিটি বাংলো এবং ভিলার সঙেঙ্গ লাগোয়া বারান্দা ও বাগান।
এসব বিষয় ছাড়াও মারমেইড রিসোর্টের নির্জন পরিবেশ এবং নিজস্ব সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য যে কাউকে মন্ত্রমুগ্ধ করে। বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময় রিসোর্টের রাস্তার পাশে ব্যাঙের ডাক ও সমুদ্রের সম্মোহনী পরিবেশ এককথায় অসাধারণ।
কক্সবাজার শহরের প্রধান কলাতলী পয়েন্ট থেকে উল্লিখিত সবগুলো সমুদ্র সৈকতে যাওয়া যাবে অটো, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, গাড়ি ও জিপে করে।
অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া
Comments