চট্টগ্রামের ৫ দর্শনীয় স্থান

দেশের অন্যতম ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রামের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। তবে আমরা অনেকেই জানি না, প্রাকৃতিক এবং স্থাপত্য সৌন্দর্যের দিক দিয়েও বন্দর নগরী অনন্য।
চট্টগ্রামের ৫টি স্থান নিয়ে আজকের আয়োজন। যেগুলো আপনি চট্টগ্রাম ভ্রমণে ঘুরে আসতে পারেন।
ভাটিয়ারী
ভাটিয়ারী, স্থানীয়দের কাছে একটি জনপ্রিয় ডে-ট্রিপ গন্তব্য। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভাটিয়ারী লেক অসম্ভব সুন্দর একটি বিনোদনের জায়গা; শান্ত পরিবেশ এবং পুরানো ঝরণা নিঃসন্দেহে আপনার মনকে পুনরুজ্জীবিত করবে। সবুজ এবং নীল রঙের সুন্দর মিশ্রণ এই জায়গাটি পিকনিকের জন্য একদম উপযুক্ত। এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি গলফ কোর্সও রয়েছে। এখানকার ফ্রেশ বাতাস, ঝকঝকে চারপাশ এবং সবুজ পরিবেশ আপনাকে প্রশান্তি দেবে।
সবশেষে, আপনি ভাটিয়ারী সানসেট পয়েন্টে একটি চমৎকার সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনার দিন শেষ করতে পারবেন।

সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত ইকো পার্কটি। প্রবেশ মূল্য মাত্র ১০ টাকা, এটা অনেকটা জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার মতো।
পার্কের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন থিমে ও বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রবেশপথের ঠিক মুখে আপনি পেয়ে যাবেন পাইন গাছের সারিবদ্ধ পথ এবং একটি সুন্দর পুকুরসহ লেকফ্রন্ট। একটু হাঁটলেই আপনি বিখ্যাত সহস্রধারা এবং সুপ্তধারা জলপ্রপাত দেখতে পাবেন। অন্যান্য জায়গায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছের বাগান, বন্য ফুলের তৃণভূমি, ফলের বাগান ইত্যাদি রয়েছে। সবচেয়ে রোমাঞ্চকর হলো বন্যপ্রাণী এলাকা যেখানে আপনি হরিণ, বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি যেমন দোয়েল, চড়ুই, বন্য তোতাপাখি এবং আরও অনেক কিছু দেখতে পারেন।
ঢাকা থেকে দূরত্ব একটু বেশি হলেও চট্টগ্রাম থেকে যেকোনো যানবাহনে মাত্র দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত
পতেঙ্গা সম্পর্কে আপনি হয়তো বেশ ভালোই জানেন। তবে সাম্প্রতিক কিছু পরিবর্তন এটিকে আক্ষরিক অর্থে একটি মিনি কক্সবাজারে রূপান্তরিত করেছে।
বড় বড় পুরানো শিলাগুলো যা সময়ের সঙ্গে কিছুটা বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছিল এখন সেগুলো পানিতে নামার সিঁড়ি হিসেবে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। যখন কেউ কেউ তাদের পা ডুবাতে পছন্দ করেন তখন অন্য কেউ আবার চায় ঢেউ তাদের উপর দিয়ে চলে যাক।
রাস্তার ওপাশে রয়েছে অসংখ্য সারিবদ্ধ স্টল, সি-শেল জুয়েলারি, বিচ স্লিপার, আচার এবং শিশুদের জন্য খেলনা; অনেকটা কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেটের মতো।
আপনি যদি পতেঙ্গাকে পুরোপুরি অনুভব করতে চান তবে ভোরে বা গভীর রাতে চলে যাবেন। এই ২ সময়েই ভীষণ আরামদায়ক একটা তাপমাত্রা থাকে এবং সমুদ্রের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ছোট ছোট মানুষের দল। এ ছাড়া পিয়াজু এবং ভাজা কাঁকড়া এই দুটি জিনিস অবশ্যই পতেঙ্গা দেখার সময় মিস করতে পারবেন না।
জাতীয় নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর
নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর চট্টগ্রামের সবচেয়ে সাংস্কৃতিকভাবে আলোকিত আকর্ষণীয় স্থানের একটি। আগ্রাবাদের প্রাইম লোকেশনে অবস্থিত এই জায়গাটি শুধু অতীতকেই সংরক্ষণ করে না বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বর্তমানকেও নথিভুক্ত করে।
জাদুঘরের এগারোটি গ্যালারি মুগ্ধকর পেইন্টিং, মডেল, বাসস্থান পুনর্গঠন, মানচিত্র, ফটোগ্রাফ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জিনিসের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে জীবন্ত করে রেখেছে।

ফয়'স লেক
ফয়'স লেক একটি কৃত্রিম হ্রদ যা চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় অবস্থিত এবং এটি শহরের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শন করা বিনোদন পার্কগুলোর মধ্যে একটি।
শিশুদের জন্য অনেক রাইড তো রয়েছেই সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্করাও একটি সুন্দর পরিবেশে পাহাড় এবং হ্রদ পেয়ে যাবেন এখানে। লেকের তীরে ভাড়া নেওয়ার জন্য সারি সারি নৌকা রয়েছে। নৌযাত্রা আপনাকে পাশের সবুজ পাহাড়, মাঝে মাঝে কয়েকটি হরিণ এবং বিভিন্ন অচেনা পাখির সাক্ষী করে রাখবে।

সম্প্রতি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রোমাঞ্চকর রাইডের পাশাপাশি 'সি ওয়ার্ল্ড' নামে একটি আলাদা ওয়াটার থিম পার্কও সংযোজন করা হয়েছে।
অনুবাদ করেছেন সাইমা তাবাসসুম উপমা
Comments