উত্তাল হচ্ছে সাগর, যেকোনো সময় বন্ধ হতে পারে চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ ফেরি সার্ভিস

দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুম শেষে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। এ কারণে যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে সদ্য চালু হওয়া চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌরুটের ফেরি সার্ভিস।
দুর্ঘটনা এড়াতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ফেরি বন্ধ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আগামী রোববার থেকে এই রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এটা টানা বন্ধ থাকবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে বর্তমানে যে ফেরিটি চলছে, তা নদীতে চলাচল উপযোগী। বর্ষা মৌসুমে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সন্দ্বীপ চ্যানেল খুব উত্তাল থাকে।
এ বছর শুষ্ক মৌসুম দীর্ঘায়িত হওয়ায় এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই কোস্টাল রুটে এই ফেরি সার্ভিস চালু রাখা গেছে।
এখন বৃষ্টির সময় চলে আসায় সাগরে এই ফেরি চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা।
সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত ১৫ মার্চ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর অশান্ত থাকে। তাই এ সময়ে কোস্টাল ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি চট্টগ্রাম জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গোপাল চন্দ্র মজুমদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাগর এখন উত্তাল হয়ে উঠছে। বর্তমানে এই ফেরি (ইনল্যান্ড) সাগরে চালানো সম্ভব নয়। আমরা বিষয়টি সরকারকে জানিয়েছি।'
'নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ফেরি বন্ধ করার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। এখন ঢাকা থেকে যখন বন্ধ করতে বলবে, আমরা তখনই বন্ধ করে দেবো,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা ফেরি চলাচল বন্ধ করার আগে দুই কূলের বাসিন্দাদের জানাব। এর মধ্যে যেসব গাড়ি সন্দ্বীপ বা চট্টগ্রামে অবস্থান করছে, সেগুলো স্থানান্তর করতে হবে। অন্যথায় অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।'
এদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ হলে বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে পন্টুন দুটি সরিয়ে নেবে বিআইডব্লিউটিএ।
সংস্থাটির উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফেরিঘাটের দুই পাশে থাকা আমাদের পন্টুনগুলো অনেক দামি। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এগুলোর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই ফেরি বন্ধ হয়ে গেলে বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে পন্টুনগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন পাঁচ জন উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌরুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। দৈনন্দিন কাজ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এ জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে জেলা শহর চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে রয়েছে উত্তাল নৌ-চ্যানেল। এই নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার।
Comments