পৃথিবীর বিপজ্জনক যত অ্যাডভেঞ্চার

রোমাঞ্চের জন্য যুগে যুগে মানুষ পরিচালনা করেছে দুঃসাহসিক অভিযান, পাড়ি দিয়েছে দুর্গম পথ। রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষ অ্যাডভেঞ্চার করতে পৃথিবীর শেষপ্রান্তে যেতেও প্রস্তুত।

অ্যাডভেঞ্চারের পরতে পরতে বিপদ লুকিয়ে থাকলেও সেই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার পেতে প্রকৃতির আরও কাছে যেতে চায় মানুষ।

এমনই কিছু বিপজ্জনক অ্যাডভেঞ্চার নিয়েই আজকের আয়োজন।

স্কাই ডাইভিং। ছবি: সংগৃহীত

স্কাই ডাইভিং

'এমন যদি হতো আমি পাখির মতো

উড়ে উড়ে বেড়াই সারাক্ষণ।'

পাখির মতো উড়ে বেড়ানোর স্বপ্নকে কিছু সময়ের জন্য বাস্তবে রূপ দিতে পারে স্কাই ডাইভিং। কল্পনা করুন, হাজার মাইল ওপর থেকে ফ্রি ফল করে ভাসতে শুরু করলেন বাতাসে। হঠাৎ অনুভব, মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণে খুলে গেল পিঠে বেঁধে রাখা প্যারাসুট! পাখির মতো উড়তে না পারলেও পিঠে বেঁধে রাখা প্যারাসুটের সাহায্যে ভেসে বেড়ালেন আকাশে। পাখির চোখে দেখলেন পৃথিবী।

বাঞ্জি জাম্পিং। ছবি: সংগৃহীত

বাঞ্জি জাম্পিং

কোনো উঁচু পাহাড় বা স্থাপনা থেকে ফ্রি ফল করলেন ইলাস্টিকের লম্বা দড়ি শরীরে বেঁধে। নিশ্চয়ই ভাবছেন, যদি এই দড়ি ছিঁড়ে যায়? কী হবে তাহলে! এমন দুশ্চিন্তা থাকলে বাঞ্জি জাম্পিংয়ের রোমাঞ্চ অনুভব করা যাবে না। বরং লাফ দেওয়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই পায়ে বাঁধা দড়ির কারণে আপনি মাটিতে না পড়ে ঝুলতে থাকবেন, আর উপভোগ করতে থাকবেন আশপাশের সৌন্দর্য।

প্রচণ্ড সাহসী না হলে এই অ্যাডভেঞ্চারের দিকে পা না বাড়ানোই ভালো। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়াতেও জনপ্রিয় হচ্ছে বাঞ্জি জাম্পিং। শুধুমাত্র উঁচু স্থাপনা বা পাহাড় থেকেই নয়, হট এয়ার বেলুন বা হেলিকপ্টার থেকেও দেওয়া হয় বাঞ্জি জাম্প।

ওয়াটার রাফটিং। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াটার রাফটিং

ওয়াটার রাফটিংয়ের জন্য স্থলে থাকলে চলবে না, নামতে হবে জলে। সাধারণত পাথুরে এলাকার প্রবল স্রোতের পানিতে ওয়াটার রাফটিং করা হয়।

১০ থেকে ১৪ মিটার লম্বা বিশেষ নৌকায় যৌথভাবে এই পাথুরে নদী পার হতে হয়। নদীর কিছু অংশে বিপদের আশংকা থাকায় এই ভ্রমণ আরও রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে।

সার্ফিং। ছবি: সংগৃহীত

সার্ফিং

সার্ফিংয়ের সঙ্গে বর্তমানে অনেকেই পরিচিত। সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভেসে চলার এক দুঃসাহসিক খেলা সার্ফিং।

একটি লম্বাকৃতির বোর্ডের ওপর দাঁড়িয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দেন সার্ফাররা। বাংলাদেশের কক্সবাজারে কয়েক বছর ধরে অনেকেই সার্ফিং করছে। সার্ফিং করতে সাহসের সঙ্গে প্রয়োজন হয় দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের।

জিপ লাইনিং। ছবি: সংগৃহীত

জিপ লাইনিং

মনে করুন, মাটি থেকে বেশ উপরে ঝুলে আছেন একটি তারকে অবলম্বন করে। নিচে তাকিয়ে দেখলেন থৈ থৈ করছে পানি অথবা ঘন জঙ্গল কিংবা পাহাড়। পিলে চমকে যাবেন না?

একটি তারের একপাশ থেকে বিশেষ হ্যান্ডেলের সাহায্যে ঝুলে স্লাইড করে আরেক পাশে যাওয়াকে বলে জিপ লাইনিং। সাধারণত পাহাড়ি এলাকা বা জলাশয়ের ওপরে রোমাঞ্চকর এই অ্যাডভেঞ্চারটি করা হয়।

হাইলাইনিং। ছবি: সংগৃহীত

হাইলাইনিং

এটি অনেকটা জিপ লাইনিংয়ের মতোই। তবে এখানে একটি শক্ত তারের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে হয় একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কোমরের সঙ্গে বেল্টের মতো করে একটি স্ক্রু আটকানো থাকে, যা সংযুক্ত থাকে ওই তারে। এতে করে পা ফসকালেও নিচে পড়ার ভয় থাকে না।

সব ধরনের নিরাপত্তা থাকলেও এটি অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ একটি খেলা। হাইলাইনিং করতে উঁচু পর্বতের দুই প্রান্তে ব্যালেন্সিং তার বেধে দেওয়া হয়। এ খেলায় সাহসের সঙ্গে প্রয়োজন ভারসাম্য ও লক্ষ্য ঠিক রাখা।

আইস ক্লাইম্বিং। ছবি: সংগৃহীত

আইস ক্লাইম্বিং

বরফে ঢাকা পর্বত আরোহণ উঁচু পর্বতে ওঠার মতোই জটিল কাজ। তবে ঝুঁকি আরও বেশি। হিমশীতল ঠাণ্ডায় শরীর কাবু হওয়া থেকে শুরু করে বরফে পিছলে পড়ে যাওয়া; যেকোনো বিপদ হতে পারে আইস ক্লাইম্বিংয়ে।

তবে বিপদের কথা ভাবলে কী আর অ্যাডভেঞ্চার হবে? সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, ইতালি, আর্জেন্টিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আইসফল আছে, যেখানে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা আইস ক্লাইম্বিং করতে যান।

তথ্যসূত্র: ট্রাভেল ট্রায়েঙ্গেল, রক ক্লাইম্বিং সেন্ট্রাল

Comments

The Daily Star  | English

Israel welcomes 'all help' in striking Iran

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

1d ago