হুমায়ূন আহমেদ ও তার সাহিত্যশক্তি
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক। সবচেয়ে খ্যাতিমান বললেও অত্যুক্তি হবে না। তবে সাহিত্যের সিরিয়াস পাঠকসমাজ হুমায়ূনকে যে খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন- তা নয়। অনেক সাহিত্য সমালোচক তাকে মূলধারার লেখক বলে মানতেও চান না। তাদের যুক্তি হলো- জনপ্রিয়তা সাহিত্যের শিল্পমূল্য যাচাইয়ের মানদণ্ড নয়। হুমায়ূন আজাদের মতো প্রথাবিরোধী লেখকেরা তাকে সিরিয়াস লেখক মানতে রাজি নন। হুমায়ুন আজাদের মন্তব্যটি বেশ তির্যক। তিনি বলেন, 'হুমায়ুন আহমেদ কোনও ঔপন্যাসিক নন, অপন্যাসিক। তিনি পাঠকের রুচি নষ্ট করেছেন।' ইমদাদুল হক মিলনকেও অপন্যাসিক বলেছেন তিনি। তাই বলে তার মূল্যায়নকে আমরা বেদবাক্য জ্ঞান করতে পারি না।
আমরা যদি হুমায়ুন আজাদের বিপ্রতীপ চিন্তাকে আশ্রয় করি তাহলে দেখবো- প্রযুক্তির বদান্যতায় বইপড়ুয়া মানুষ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। অস্থিরচিত্ততা বইবিমুখ করছে তরুণপ্রজন্মকে। কিন্তু আমাদের হুমায়ুন আহমেদ এই টিনেজ-তরুণদেকে বইপাঠের প্রতি তীব্রভাবে আকুল করতে পেরেছিলেন। এটি 'রুচি নষ্ট করা' নয়; বরং বইপড়ার অভ্যাস গড়ে দিয়েছেন নিযুত শিক্ষার্থীর। এই অভ্যাস একদিন তাদের বিশ্বলোকের মহৎ সব গ্রন্থপাঠে প্রণোদিত করবে - এমন ভাবনা অমূলক নয়। আমাদের দেশে অবশ্য শিল্প-সাহিত্য মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অপরের জিভ দিয়ে তরকারির লবণের স্বাদ বোঝার অসার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ অপরের চোখ দিয়ে নান্দনিকতাও অনুভব করতে চান। এই প্রয়াস হাস্যকর। ফলে তার মতো জনপ্রিয় লেখকেরা সহজে মূলধারার কাতারে ওঠে আসলেও- তাদেরকে ধাক্কা মেরে নামানোর অপচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়।
নবীন লেখকের পক্ষে এটি এক ধরনের চ্যালেঞ্জও বটে। অনায়াসে জয় করলেন সমস্ত পথ। বাংলাসাহিত্যের কোনও লেখক নিজের প্রকাশিত গ্রন্থ বিক্রয়ের অর্থ এত বিপুল পরিমাণে উপার্জন করতে পেরেছেন কিনা সন্দেহ। শরৎচন্দ্র, সুনীলের পর গল্প বলার এত ক্ষমতা কম লেখকের মধ্যেই দেখেছি। প্রায় তিন শতাধিক গ্রন্থে নতুন নতুন গল্প বুনন করে গেছেন তিনি। সাহিত্যে 'চিরত্ব' গুণ থাকতে হয়। মহৎ সাহিত্যে কালের খেয়া পাড়ি দিয়ে চিরকালের খেয়ায় আরোহণ করার মতো সারবস্তু থাকে। হুমায়ূনের সব গ্রন্থই কি তবে কালোত্তীর্ণ হবার দাবি রাখে নাকি তাঁর সব গ্রন্থই অসার? এই দ্বিধা-সংকোচ এই সময়েও যেন কাটতে চায় না আমাদের!
হুমায়ূনের পাঠ ও পাঠকৃতি উপলব্ধির জন্য প্রাসঙ্গিক দুটো প্রাথমিক কথা বলে নেয়া ভালো- এক. পরের হাতে মিঠাই খাওয়া কিংবা আরোপিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকে মূল্যায়ন না করা, দুই. সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তনশীল জীবন ও সমাজের বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে তাকে বিচার করতে হবে। প্রথম প্রবণতাটির কথা পূর্বেই আভাস দিয়েছি। দ্বিতীয় প্রসঙ্গটি হুমায়ূন আহমেদকে মূল্যায়নে বিশেষ জরুরি বলে মনে করি। একালের সাহিত্য, সংগীত, শিল্পকলার নানা শাখা সমৃদ্ধ হবে সমকালীনতার নিরিখে। লেখকের মানস-গঠন এবং লেখালেখির আন্তরপ্রেরণার মূলে যুগধর্মের নানামাত্রিক প্রভাব-প্রবণতার সন্নিবেশ অনিবার্য। ফলে হুমায়ুনের কথাসাহিত্য পড়তে বসে আমরা যদি বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র প্রমুখকে মানদ- হিসেবে দাঁড় করাই কিংবা প্রতিতুলনা করি- তা বিবেচনাপ্রসূত কাজ হবে না। সাহিত্য প্রতিটি যুগে স্বকালের বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে অবচেতনে কিংবা সাবলীল স্বতঃস্ফূর্ততায়।
বঙ্কিমের কিংবা শরৎচন্দ্রের সময়ের জীবন ও সমাজভাবনা কিংবা কাঠামো আজকে বদলে গেছে। ষাটের দশকে রচিত আমাদের দেশপ্রেমমূলক গানের যে সুগভীর আবেদন আজকের দিনে তেমনটি পাই না বলে আমরা অনেক সময় আক্ষেপ করি। কিন্তু এই যাবতীয় পরিবর্তন-বিবর্তন-রূপান্তরের পেছনে সময় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। সময়ের অনিবার্য প্রবাহকে কেউ রুঁখে দিতে পারে না। গত বিশ-ত্রিশ বছরে বদলে গেছে আমাদের জীবন ও সমাজের গতিপ্রকৃতি। পুঁজিবাদী অর্থনীতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ,তথ্য-প্রযুক্তির অপরিহার্য উত্থান ও শাসন টালমাটাল করেছে পূর্বেকার সকল প্রথা-মূল্যবোধকে।
এই যুগে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এলেও তার জীবন-সাহিত্য ও শিল্প-ভাবনার বিষয় ও প্রকৃতি পাল্টে যেত সন্দেহ নেই। এমন চিন্তাকে আমরা যদি মাথায় নিই তবে হুমায়ূন পড়তে বসে শরৎ কিংবা বঙ্কিম প্রমুখের সঙ্গে মেলাবো না। রবীন্দ্র-সৃষ্টিভাণ্ডার হতে অনেক শব্দ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ নিজের বইয়ের নামকরণ করেছেন। তাই বলে রবীন্দ্রসাহিত্যের আদল আর হুমায়ূনসাহিত্য একই ছাঁচের নয়। সেই দিক থেকে হুমায়ূন স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও সমাজই তাঁর আরাধ্য। নাগরিক জীবন এবং গ্রামীণ জীবন উভয় পরিপ্রেক্ষিতকেই তিনি উপস্থাপন করেছেন নিজস্বতায়। তবে বাঙালি সমাজ-জীবন এবং মানবচরিত্রের রূপায়ণে তার স্বকীয় শৈলী। হুমায়ূনের শিল্পী-সত্তার সহজতা বরং তাকে অনন্য মাত্রা দান করেছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে। তিনি খুব ভালোভাবেই জানতেন যে মানবজীবন অপূর্ণতার চাদরে ঢাকা।
জীবন বেদনারও! অনেকে হয়তো আমার এই মন্তব্যে দ্বিধাগ্রস্ত হবেন। জীবন-জগৎ নিয়ে যার যত গভীর এবং সূক্ষ্ম দার্শনিক-বোধ- ততই সে নৈঃসঙ্গবোধে উচ্চকিত। এই নৈঃসঙ্গবোধ গভীরতর অসুখের মতো। হুমায়ূন এত খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব- তার আবার নৈঃসঙ্গবোধ কীসের। এত জনপ্রিয়, এত সফল মানুষেরও আবার একাকীত্ববোধ থাকতে পারে! আধুনিক মানুষের বিচিত্র জটিলতা। নিজের সঙ্গে নিজের বিরোধ- নিজসত্তার সঙ্গে নিজের বিরোধ! ফলে ক্রাইসিসও বহুমাত্রিক। আমরা অনেকেই মনে করি হুমায়ূন আহমেদ লঘুচালের সস্তা জনপ্রিয় বাজারি লেখক। সাহিত্যের বাজার তিনি সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ফলে এই অর্থে তিনি না হয় বাজারি লেখক, কিন্তু চরিত্র-রূপায়ণে 'সেন্স অব হিউমারের' তীব্র প্রয়োগ দেখে যারা তাকে হালকা লেখক মনে করেন- তারা ভ্রান্তিতে আছেন। 'উইট' এবং 'হিউমার' এবং প্রয়োগ-কুশলতা মহৎ সব সাহিত্যিকদের অন্যতম গুণ।
আসলে জীবনের গুরুভারকে লঘু করা কিংবা বেদনাময় অপূর্ণতায় ঢাকা মহাজীবনকে তিনি হাস্য-কৌতুকরসে খানিকটা ভারমুক্ত করে দেখবার অভিনব 'টেকনিক অব আর্ট' হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তিনি একাধিক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন যে- তিনি নিঃসঙ্গতাকে ভয় পান। দুটো ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায় তার উপলব্ধ ভয়াবহ নৈঃসঙ্গবোধের গভীরতা। যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডিতে পড়াশোনাকালে বাসার যে কক্ষে তিনি একা থাকতেন এবং ঘুমাতেন- সেখানে একদিন লক্ষ করলেন একটি দেয়াল ঘড়ি থেকে টিক্ টিক্ শব্দ হচ্ছে। বিরক্ত হয়ে পরদিন মেকানিক নিয়ে এসে টিক্ টিক্ শব্দ বন্ধ করার ব্যবস্থা করলেন। সারাদিনের কাজ শেষে রাত্রে ঘুমাতে গেলেন- হঠাৎ নিজেকে চরম নিঃসঙ্গ অনুভব করলেন! এবার ভাবলেন, ঘড়িটির টিক্ টিক্ শব্দই তো ভালো ছিল, যে ভাবনা সেই কাজ। পরদিন আবার ঐ মেকানি কে ডেকে আনলেন বাসায়।
বললেন, আমার ঘড়িটি আগে যেমন শব্দ করতো- তেমনই করে দেন। মেকানিক তো অবাক! আমাদেরও হাসি পায় এমন উদ্ভট কাণ্ডে। কিন্তু একটু খেয়াল করলে এই কাণ্ডে গভীরতা উপলব্ধি করা যায়। বোঝা যায়- প্রবাসের নিঃসঙ্গ ঘরটিতে দেয়াল ঘড়িটির টিক্ টিক্ ধ্বনিও তাঁকে সঙ্গ দিতো। মনোলোকের নৈঃসঙ্গবোধ কাটাতো তার। পারসনিফিকেশনের এমন দৃষ্টান্ত জীবনানুভবের সুউচ্চ স্তরকেই প্রতিফলিত করে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, উনি একাকীত্বকে চরম ভয় পান। তাই সবসময় মানুষের সঙ্গ কামনা করেন। এমনকি কোথাও বেড়াতে গেলেও পরিবার-স্বজন, বোন-ভাগ্নে নিয়ে যান এবং হৈচৈ করতে ভালোবাসেন।
এসব ঘটনা থেকে হুমায়ূন আহমেদের মনোলোকের বিশেষ দিকের সন্ধান পাই। বাঙালি মধ্যবিত্তের যাপিত জীবনের প্রাত্যহিকতার অনুপম উপস্থাপন দেখি তাবৎ সৃষ্টিকর্মে। জীবনকে সহজ এবং ইতিবাচক করে দেখার বিশিষ্টতা ছিল তার। ভবঘুরে হিমু কিংবা জীবনের জটিলতা ও রহস্য উন্মোচনকারী মিসির আলি আমাদের সমাজেরই বাস্তবানুগ প্রতিনিধি। আমাদেরই পরিবারভুক্ত চেনা চরিত্র এরা। যদিও তার চরিত্র, সংলাপ রচনার মধ্যে আপাত অদ্ভূত এবং উদ্ভট বলে অনেক সময় প্রতিভাত হয়। এর পেছনে আছে ব্যক্তিচৈতন্যের মনোজাগতিক চিরায়ত রহস্য। আছে অ্যাবসার্ড ভাবনা।
'নন্দিত নরকে', 'শঙ্খনীল কারাগার', 'আগুনের পরশমণি', 'জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প' এ সব বই ফিকে হতে পারে না। উল্লিখিত রচনা চিরায়ত রসভাষ্যে সমুজ্জ্বল। মুক্তিযুদ্ধের বয়ান কিংবা রূপায়ণেও তিনি অনেকটাই নির্মোহ পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধত্তোর পরিস্থিতি ও বাস্তবতাকে তুলে ধরবার প্রয়াস পেয়েছেন ভিন্নতর রূপকল্পে। তার গল্প-উপন্যাস-নাটকে 'ঢাকা' শহরের জীবনের বৈচিত্র্যময় রূপ ব্যাপকভাবে চোখে পড়ে। আবার লোকজীবনের প্রতিও তার গভীর অনুরাগ প্রগাঢ় ভালোবাসায় চিত্রিত হয়েছে। তার জন্মস্থান নেত্রকোণায়। বাংলাদেশের সাতটি জেলাকে ভাটি অঞ্চল বলা হয়। মানুষ যত বিখ্যাতই হোক না কেন- সে তার শৈশবের প্রভাব এড়াতে পারে না। হুমায়ূন আহমেদও পারেননি। ভাটি বাংলার জনজীবন ও সংস্কৃতি তার অস্থিমজ্জায়। নগরজীবনের অনন্য রূপকার হয়েও বাংলার আবহমান লোকজীবনের নিখুঁত বয়ান এবং দৃশ্যায়ন দেখি তাঁর শিল্পকর্মে।
বিশেষ করে টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রে বাংলার লোকজীবন ও লোকসংস্কৃতির অনুপম চিত্র উপস্থাপন করেছেন অকৃত্রিম প্রাণাবেগে। বিভিন্ন চরিত্রের ভেতর দিয়ে সমাজ-জীবনের অনুপুঙ্খ পাঠ হাজির করেছেন বিচিত্র দৃশ্যগ্রাহ্যতায়। দৃশ্যনির্মাণের প্রয়োজনে গানও রচনা করেছেন কখনও কখনও। ভাটি অঞ্চলের অসাধারণ সব লোকগানকে সংযোজন করেছেন নবতর মাধুর্যে। তার সিনেমায় লোকায়ত সমাজ ও জীবন-সংস্কৃতির অপূর্ব সন্নিবেশ দেখতে পাই। ফলে আধুনিক জীবন-ভাবনার সঙ্গে লোকায়ত জীবনধারা ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণ কিংবা সম্মিলনে হুমায়ন আহমেদের এই অনন্য অবদানের কথা অনস্বীকার্য। তার 'ঘেটুপুত্র কমলা' তো আদ্যপান্তই হাওরের জীবন-সংস্কৃতিরই রূপ ও রূপান্তরের চালচিত্র।
তার বৈচিত্র্যময় সৃজনকর্মে সমাজ-প্রতিবেশ ও বহুবর্ণিল জীবনের রূপায়ণ, ভাষা ও পরিবেশ নির্মাণ-কৌশল, চরিত্র-সৃজন ক্ষমতার অসাম্য রূপকার তিনি। অকৃত্রিম আবহে সৃষ্ট জীবন্ত চরিত্রগুলো স্বতঃস্ফূর্ততায় মুখর। অথচ অনেক বড় লেখকের লেখায়ও এই স্বতঃস্ফুর্ততার ঘাটতি দেখি। স্বতঃস্ফূর্ততাই সকল শিল্পের প্রাণ। টেলিভিশন নাটকের অনন্য রূপকার তিনি।
বলা চলে এই ধারায় ব্যতিক্রমী এবং সফল নাট্যকার তিনি। গল্প, উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র যেটিতেই হাত দিয়েছেন- সেই মাধ্যমটিই জননন্দিত হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে সামরিক শাসনামলেও তাঁর লেখা নাটকে পথিকৃতের মতো তোতা পাখি দিয়ে 'তুই রাজাকার' বলে প্রতীকী এবং সাহসী ধ্বনি তুলেছিলেন! 'কোথাও কেউ নেই' ধারাবাহিক নাটক নিয়ে তো সারাদেশে তুলকালাম কা-ই বেঁধেছিল! আসাদুজ্জামান নূর অভিনীত বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হবে আগামি পর্বে- সারাদেশের দর্শক গেলেন ক্ষেপে! মিছিল হলো জেলায় জেলায়- বাকের ভাইয়ের ফাঁসি দেয়া যাবে না।
সেই সময়ে হুমায়ূন আহমেদ সিলেট ভ্রমণে গিয়ে বেসামাল দর্শকদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। হুমায়ূনের গায়ের শার্ট ছিঁড়ে ফেললো ক্ষুব্ধ জনতা। তবু বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হলো নাটকের অনিবার্য পরিণতিতে! এই তো হুমায়ূন। পৃথিবীতে লেখালেখি করে এমনভাবে নাড়া দিতে পেরেছেন কজন? আরও কত বিচিত্র জীবনকথা বলবার আছে তার! এই সীমিত সীমায় তা বলবার প্রযোজনও দেখছি না।
শুধু বলতে চাই যারা হুমায়ুনকে প্রথাগত সাহিত্য সমালোচনার তাক ধরা কাঠামোতে বিচার করতে চান- তারা তার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টিভাণ্ডারের অতলে পড়ে যাবেন। আমরা বাঙালি- জাতনিন্দুক। কাউকে না পড়ে, গভীরভাবে অধ্যয়ন না করেই প্রত্যাখান করে একধরনের পৈশাচিক সুখ পাই। অথচ কথা ছিল তার সাহিত্য শক্তি তালাশ করার।
Comments