বন্যাদুর্গতদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের বালুচিস্তানের জাফরাবাদের এক গ্রামে বন্যার পানিতে ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় অস্থায়ী বাসস্থানে থাকছে এক পরিবার। ছবি: রয়টার্স
পাকিস্তানের বালুচিস্তানের জাফরাবাদের এক গ্রামে বন্যার পানিতে ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় অস্থায়ী বাসস্থানে থাকছে এক পরিবার। ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভয়াবহ বন্যার মোকাবিলায় সহায়তা চেয়েছেন।

আজ বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদন মতে, শুক্রবার এক টুইটার বার্তায় শাহবাজ এই অনুরোধ জানিয়েছেন। 

মধ্য জুন থেকে চলমান ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানে এ পর্যন্ত ৯৩৭ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ জানান, তিনি রাজধানী ইসলামাবাদে বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলাপ করেছেন।

তিনি টুইটারে বলেন, 'প্রবল বৃষ্টির কারণে সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞ ছড়িয়ে পড়েছে।'

অন্যান্য দেশ ও গোষ্ঠীকে তিনি সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে যোগ করেন, 'আমরা সবাই মিলে আবারও সব কিছু পুন:নির্মাণ করবো'

তুমুল বৃষ্টি ও গলে যাওয়া পাহাড়ি বরফ থেকে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষ প্রভাবিত হয়েছে।

দেশটির প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেক সড়ক পানিতে ভেসে গেছে এবং প্রায় ১৫০টি সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে।

কিছু জায়গায় বন্যার পানি কমে গেলেও সিন্ধু প্রদেশে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানে উদ্ধারকর্মীরা নৌকার মাধ্যমে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করছেন। হাজারো মানুষ অস্থায়ী বাসস্থান ও তাঁবুতে বসবাস করছেন।

পানিতে ভেসে যাওয়া বাড়ি থেকে ব্যবহারযোগ্য উপকরণ সংগ্রহ করছে এক পরিবার। ছবি: এপি
পানিতে ভেসে যাওয়া বাড়ি থেকে ব্যবহারযোগ্য উপকরণ সংগ্রহ করছে এক পরিবার। ছবি: এপি

এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে শাহবাজ শরীফের সরকার দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করার জন্য পাকিস্তানে নিয়োজিত জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ও অংশীদারদের ৩০ লাখ মার্কিন ডলার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'এই তহবিল বন্যাদুর্গত অঞ্চলের মানুষদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা, পানি ও পয়:নিষ্কাশন খাতে ব্যবহার করা হবে। সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে।'

সাধারণত পাকিস্তানে জুলাই মাস থেকে বর্ষাকাল ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়। তবে এ বছর জুন থেকেই তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যার ফলে দেশটি বন্যায় আক্রান্ত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ ধরনের অস্বাভাবিক ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং লাখো মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।

দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমানের মতে, এ মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন কাজ হবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য খাদ্য ও তাঁবুর ব্যবস্থা করা।

বন্যাদুর্গতরা শুষ্ক ভূমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। ছবি: এপি
বন্যাদুর্গতরা শুষ্ক ভূমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। ছবি: এপি

তিনি বলেন, 'এটি নজিরবিহীন পর্যায়ের মানবিক সংকট। হাজারো মানুষ আশ্রয়হীন হয়েছে, অনেকেই খাবার পাচ্ছেন না এবং অনেকে বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছেন।'

'প্রাদেশিক সরকার বা ইসলামাবাদের কাছে সাহায্য চেয়ে লাভ নেই। কোনো একটি প্রশাসন বা সরকারের পক্ষে এই মানুষগুলোর পুনর্বাসন, বা তাদের উদ্ধার ও ত্রাণ দেওয়া সম্ভব নয়। এটি তাদের সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে গেছে', যোগ করেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Iran's top security body to decide on Hormuz closure

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

15h ago