পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান কে, কী করবেন ইমরান খান

লেফটেনেন্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান
আসিম মুনির। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে অনেক টানাপড়েন ও বিতর্ক হয়েছে। তবে, শেষ পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে এই পদে মনোনীত করা হয়েছে। যিনি হবেন তর্কসাপেক্ষে দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। আগামী ২৯ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন আসিম মুনির।

পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান আসিম মুনির কে?

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির বর্তমানে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল। তিনি বর্তমান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার ঘনিষ্ঠ বলে শোনা যায়। একজন ব্রিগেডিয়ার হিসেবে  আসিম মুনির ফোর্স কমান্ড নর্দার্ন এরিয়াসের (এফসিএনএ) কমান্ডার ছিলেন, তখন বাজওয়া এক্স কর্পসের কমান্ডার ছিলেন। এফসিএনএ এক্স কর্পসের কমান্ডের অধীনে পড়ে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুনির অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল মাংলার একজন স্নাতক এবং বর্তমান দুই তারকা জেনারেলদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র। যাদের সবাই আবত্তাবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির একই ব্যাচের সদস্য।

আসিম মুনির কি পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান ছিলেন?

হ্যাঁ। মুনির সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান এবং আইএসআইয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একটি বিরল সংমিশ্রণ। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তাকে পাকিস্তানের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক করা হয় এবং এই পদে ২১ মাস দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৮ সালের অক্টোবরে তিনি আইএসআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল হন। তবে আইএসআইয়ের ডিরেক্টর হিসেবে মুনিরের মেয়াদ ছিল সবচেয়ে কম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুরোধে বাজওয়া তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন।

ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির পরিবারের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি তার নজরে আনার পর খান মুনিরের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বলে শোনা যায়।

আইএসআই থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়ার পরে জেনারেল বাজওয়া মুনিরকে কর্পস কমান্ডার গুজরানওয়ালা হিসেবে পোস্ট করেন। সেখান থেকে তিনি রাওয়ালপিন্ডির জিএইচকিউতে তার বর্তমান পদে চলে যান।

কী চেয়েছিলেন ইমরান খান?

পাকিস্তানের নতুন প্রধানের নিয়োগ এত বিতর্কিত এবং রাজনৈতিকভাবে অভিযুক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল এটি। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও তার ভাই এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ (যিনি লন্ডনে স্ব-নির্বাসনে বসবাস করছেন ও সরকারের কাজের বিষয়ে প্রায়ই পরামর্শ দেন) ঘোষণা করেছিলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি নীতিটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।

তাদের ঘোষণার মানেই ছিল মুনির। তবে, চলতি মাসে লাহোর থেকে খানের চলমান লং মার্চের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সরকারকে একটি আগাম নির্বাচনের চাপ দেওয়া। ইমরান খান ও তার দল নিশ্চিত করেছিল তারা দাবি আদায় করে ছাড়বে। এই দাবি ছাড়াও ইমরান খান ও তার দলের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল সেনাপ্রধান নিয়োগে সবার মতামতে একমত হতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

ইমরান কি আসিম মুনিরের নিয়োগ ঠেকাতে পারবেন?

চাইলে তিনি তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের সদস্য রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভির মাধ্যমে শেষ চেষ্টা করতে পারেন। যদিও শেহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভা আসিম মুনিরের নাম অনুমোদন করেছে। তবে, রাষ্ট্রপতি আলভিকে তাতে স্বাক্ষর করতে হবে। যা সাধারণত একটি আনুষ্ঠানিকতা।

কিন্তু, ইমরান খান এই পথে যেতে চান কিনা বা প্রেসিডেন্ট আলভি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কী করবেন তা এখনো অনিশ্চিত।

Comments

The Daily Star  | English
G7 statement on Israel Iran war

Sirens sounded after missiles launched from Iran, says Israeli army

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

12h ago